Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪,

জিম্বাবুয়েকে বিশাল লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক

জুলাই ১৬, ২০২১, ১১:৩০ এএম


জিম্বাবুয়েকে বিশাল লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ

একমাত্র টেস্টে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এবার মিশন ওয়ানডের। তবে ব্যাট করতে নেমেই শুরুতে বিপাকে পড়ে যায় টাইগাররা। এমন পরিস্থিতিতে দলকে আলোর মুখ দেখালেন লিটন দাস ও আফিফ হোসেন। তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে জিম্বাবুয়ের সামনে ২৭৭ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ। 

শুরুতেই ব্যাট করতে নেমেই ৭৪ রানে নেই ৪ উইকেট। ভীষণ বিপদে ছিল দল। কিন্তু ওপেনিংয়ে নেমে লিটন একটা প্রান্ত ধরে খেলে গেলেন। পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে গড়লেন গুরুত্বপূর্ণ ৯৩ রানের জুটি।

মাহমুদউল্লাহ ফিরে গেলেও লিটন তার মনোসংযোগ হারাননি। দেখেশুনে খেলে ছুঁয়েছেন তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার এবং বরাবরের মতো স্ট্রাইকরেটের কথা মাথায় রেখে।

১১০ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন লিটন, ৮ বাউন্ডারিতে। এখনও হাল ধরে আছেন। সঙ্গে ১৬ রান নিয়ে আছেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ৪১ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২০৬ রান।

টসের সময় তামিম জানিয়েছিলেন, প্রথম ঘণ্টায় পিচে থাকবে বোলারদের জন্য বাড়তি সুবিধা। তাই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের থাকতে হবে অধিক সতর্ক। কিন্তু টাইগার অধিনায়ক নিজেই পারেননি সতর্ক থাকতে, পারেনি পরের ব্যাটসম্যানরাও। উল্টোদিকে প্রথম ঘণ্টার সুবিধা কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশকে বিপদে ফেলেছে জিম্বাবুয়ে।

হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। যদিও টাইগার অধিনায়ক তামিম জানিয়েছেন, টস জিতলে তিনি আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতেন।

কেন আগে বোলিং নিতেন তামিম, তারই যেন প্রমাণ দিলেন জিম্বাবুয়ের দুই নতুন বলের পেসার। প্রথম দুই ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানি ও টেন্ডাই চাতারার বিপক্ষে সুবিধাই করতে পারেননি তামিম ও লিটন।

বেশ কয়েকটি বলে আউটের সম্ভাবনা জাগান এ দুই পেসার। অল্পের জন্য বেঁচে যান দুই টাইগার ওপেনার। তবে প্রথম দুই ওভার থেকে কোনো রান অবশ্য করতে পারেনি বাংলাদেশ।

তৃতীয় ওভারের প্রথম বলটি অফস্ট্যাম্পের খানিক বাইরে করেছিলেন মুজারাবানি। এক্সট্রা বাউন্স থাকা ডেলিভারিটি কাট করতে চেয়েছিলেন তামিম। কিন্তু তার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে যায় উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৯তম বারের মতো শূন্য রানে আউট হন তামিম। যা কি না বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশিবার শূন্য রানে আউট হওয়ার রেকর্ড। শুধু তাই নয়, তিন ফরম্যাট মিলেও বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ডাকের মালিক এখন তামিম।

অধিনায়কের বিদায়ের পর তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই স্ট্রেইট ড্রাইভে চার মেরেছেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের ইনিংসেও এটিই প্রথম রান। পরের ওভারে লেগসাইডে বিশাল ওয়াইডে বোনাস বাউন্ডারি দেন টেন্ডাই চাতারা।

তামিম-লিটন সুবিধা করতে না পারলেও, শুরু থেকেই উইকেটে ব্যস্ত সময় পার করতে থাকেন তিনি। বিশেষ করে চাতারার ওভারে কাভার ড্রাইভে হাঁকান দর্শনীয় এক চার।

কিন্তু বেশিক্ষণ এটি চালিয়ে নিতে পারেননি সাকিব। ইনিংসের নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে মুজুরাবানির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৩ চারের মারে ২৫ বলে ১৯ রান করেন সাকিব।

তামিমের মতোই সাকিবের আউটের ডেলিভারিতেও ছিল এক্সট্রা বাউন্স। তবে ঠিকঠাক ব্যাটে নিতে পেরেছিলেন সাকিব। কিন্তু তার ব্যাটে ডাবল টাচ লেগে বল চলে যায় শর্ট এক্সট্রা কাভারে দাঁড়ানো রায়ান বার্লের হাতে।

সাকিব ফিরে যাওয়ার পর মিঠুনের শুরুটাও ছিল আশা জাগানিয়া। কিন্তু বেশ কয়েকটি দৃষ্টিনন্দন অফ ড্রাইভের পর জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলা শটে কট বিহাইন্ড হন তিনি (১৯ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ১৯)। যেখানে ছিল না কোনো ফুট মুভমেন্ট।

মিঠুনের মতো প্রায় একইভাবে সাজঘরে ফিরেছেন মোসাদ্দেক। বাঁহাতি পেসার রিচার্ড এনগারাভার বল ফুট মুভমেন্ট ছাড়াই অফসাইডে খেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু ধরা পড়েন উইকেটরক্ষক রেগিস চাকাভার গ্লাভসে। ১৫ বল খেলে করেন মাত্র ৫ রান। ৭৪ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

সেখান থেকে লিটন দাস আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের প্রতিরোধ। দারুণ খেলে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি তুলে নেন লিটন। মাহমুদউল্লাহ তার প্রথম ১৮ রান তুলেন কোনো বাউন্ডারি ছাড়াই। ছক্কা মেরে পৌঁছান বিশের ঘরে।

থিতু হওয়ার পর তারা দুজনই হাত খুলেছেন। টানা পাঁচ ওভার আটের ওপর করে রান নিয়েছেন। জুটিটি সেঞ্চুরির কাছেই পৌঁছে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহকে স্লো বাউন্সারে বিভ্রান্ত করে উইকেট তুলে নেন লুক জঙ্গি।

লিটনের সঙ্গে ৯৩ রানের জুটিতে মাহমুদউল্লাহর অবদান ছিল ৩৩ রান। ৫২ বলে ১ ছক্কায় এই রান করেন টাইগার দলের অভিজ্ঞ সেনানী।

শেষ মুহূর্তে তেমন ভালো করতে পারেনি তাসকিন আহমেদ ও সাইফ উদ্দিন। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২৭৭/৯ (ওভার ৫০) (লিটন ৫৭, মাহমুদউল্লাহ ৩৩, সাকিব ১৯, তামিম ০, মিঠুন ১৯, মোসাদ্দেক ৫, মেহেদী হাসান ২৬, আফিফ ৪৫, তাসকিন ১, সাইফ উদ্দিন ৮) 

আমারসংবাদ/এমএস