Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

ফের করোনার নতুন ঢেউ

মাহমুদুল হাসান

জুলাই ১, ২০২২, ০১:৩৫ এএম


ফের করোনার নতুন ঢেউ

করোনা ভাইরাসের নতুন ঢেউয়ের কবলে দেশ। তিনটি ঢেউ মোকাবিলার সময় ২৯ হাজার ১৪৫ জন প্রাণ হারিয়েছে। প্রায় পৌনে ২০ লাখ মানুষ শনাক্ত হলেও অধিকাংশ এখন সুস্থ। আগের ঢেউয়ের তুলনায় এখন কোভিড রোগীর মধ্যে জটিলতা কম। জ্বর, সর্দি, কাশি দেখা দিলে করোনা পরীক্ষা করে না। ঘরে বসে প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছে। 

হাসপাতালেও আগের মতো নেই রোগীর চাপ। ফলে কয়েকগুণ রোগী অ-শনাক্ত থেকে যাচ্ছে। মৃত্যুহারও অতীতের চেয়ে কম। অধিকাংশ নাগরিককে টিকার আওতায় নিয়ে আসায় করোনা অতীতের মতো ভয়াবহতা ছড়াতে পারছে না। 

প্রধানমন্ত্রী গত বুধবার সংসদে বলেছেন, করোনা ভাইরাস আমরা সফলভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছি। আমরা সবাইকে টিকা দিতে পেরেছি। ডব্লিউএইচওর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা শতভাগ টিকা দিতে পেরেছি। নতুনভাবে দেখা দিয়েছে। সবাইকে বলব, স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতে। এদিকে গত দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দেশে ৫ শতাংশের বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী, নিয়ন্ত্রণে থাকা করোনা শনাক্তের হার পরপর দুই সপ্তাহ পাঁচ শতাংশের বেশি হলে পরবর্তী ঢেউ ছড়িয়েছে বলে ধরা হবে। সেই হিসাবে দেশে এখন করোনা ভাইরাসের চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়েছে। গত ১৬ জুন ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়া শনাক্তের হার টানা ১৪ দিন পর গত বুধবার দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। 

এর আগে ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণের পর ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তা নিয়ন্ত্রণে আসে। মার্চের শেষে আবার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। সেটি নিয়ন্ত্রণে আসে গত ৪ অক্টোবর। গত ২১ জানুয়ারি দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ দেখা দেয়। প্রায় তিন মাস পর ১১ মার্চ নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর তিন মাস করোনা স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি ছিল। 

এরপর ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে সংক্রমণ। গত বুধবার প্রাণহানি না ঘটলেও আরও দুই হাজার ২৪১ জনের নমুনায় ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে।  মোট নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশ।

এদিকে দেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ফের নো মাস্ক নো সার্ভিস নীতিতে হাঁটছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তবে বাস্তবায়নে তেমন তদারকি লক্ষ করা যায়নি। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, জুলাইয়ের মাঝামাঝি সংক্রমণ চূড়ায় উঠবে।

এরপর এক সপ্তাহ স্থিতাবস্থা থাকবে। পরে কমে আসবে। সম্প্রতি জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস নীতি প্রয়োগ করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম যথাসম্ভব বর্জন করা। 

এছাড়া নির্দেশে আছে, ধর্মীয় প্রার্থনার স্থানসমূহে (যেমন— মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদি) মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, জ্বর, সর্দি, কাশি বা কোভিড-১৯ এর উপসর্গ দেখা দিলে কোভিড টেস্ট করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে, দোকান, শপিংমল, বাজার, ক্রেতা-বিক্রেতা, হোটেল-রেস্টুরেন্ট সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক না পরলে আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন করা এবং স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন, মাস্ক পরিধানের বিষয়ে মসজিদে জুমার নামাজে খুতবায় ইমামরা সংশ্লিষ্টদের সচেতন করতে কাজ করা।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনা এখন ঊর্ধ্বমুখী। আমরা কিছুটা চিন্তিত। আমরা শঙ্কিত নই, আমরা প্রস্তুত আছি। সংক্রমণ রোধে গত সপ্তাহে আমরা সভা করেছি। সেখানে কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। তিনি বলেন, অফিস, স্কুলে গেলে মাস্ক পরবেন। ট্রেনে, বাসে গেলে মাস্ক পরতে হবে। 

গত সপ্তাহে এ বিষয়ে অনুরোধ করেছি। ক্যাবিনেটসহ বিভিন্ন জায়গায় চিঠি দিয়েছি। জনগণ এই নির্দেশনা পালন করবে বলে প্রত্যাশা করছি। আমরা আহ্বান জানাচ্ছি মানুষ যাতে ভ্যাকসিন নেয় ও মাস্ক পরে। আমাদের টিকা কার্যক্রম চলমান আছে। আমরা শিশুদের টিকা কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। 

শিশুদের জন্য করোনার টিকা আমরা জুলাই মাসের মাঝামাঝি পেয়ে যাব বলে আশা করছি। এটা হাতে আসলে জুলাইয়ের শেষে টিকা কার্যক্রম শুরু করতে পারব পাঁচ থেকে ১২ বছরের শিশুদের জন্য।

Link copied!