Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

ইস্যু প্রভাবে নাগরিকে চাপ

আবদুর রহিম

জুলাই ২১, ২০২২, ০১:১২ এএম


ইস্যু প্রভাবে নাগরিকে চাপ

ইস্যু আসে ইস্যু যায়, রাজনীতিতে বিতর্ক থাকে। প্রতি মাস-সপ্তাহ ইস্যুতেই গরম পরিস্থিতি দৃশ্যমান। খুন, অর্থনৈতিক সেক্টরের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, করোনা, গণধর্ষণ, অর্থলুট, রোহিঙ্গা ইস্যু, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক অধিকার ইস্যুর আঘাতে ঝাঁজ থাকে সবসময়। কিন্তু সামপ্রতিক সময়ে ইস্যুগুলো দেশের নাগরিকের ওপরও বড় প্রভাব ফেলছে। 

সরকার ঘোষিত এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং, ওয়াসার পানি ও ৫৩টি ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি, তলোয়ার রাইফেল নিয়ে ইসির বক্তব্যে ঘরে ঘরে নাগরিকের সাথে যুক্ত হয়ে পড়ছে। যন্ত্রণা কষ্ট বাড়াচ্ছে। রাজনৈতিক উত্তেজনার সাথে সাধারণ মানুষেরও ক্ষোভ বাড়ছে। বিদ্যুৎ সংকটসহ দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। 

রিজার্ভের সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে রয়েছে যা দেশে ফিরছে না বলে রাজনৈতিক মহল থেকে অভিযোগ রয়েছে। 

অভিজ্ঞ মহল বলছেন, বিদ্যুৎ সংক্রান্ত খাতের টাকা দেশে না ফিরলে পোশাক শিল্পের ওপর প্রভাব পড়বে এবং সেই খাতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি চাহিদার ঘাটতি হলে সমস্যা তৈরি হবে, পরিবহনে 
সমস্যা সৃষ্টি হবে। জ্বালানি তেল ও বিদ্যুৎ সম্পূর্ণভাবে অর্থনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যখন রেশনিং সিস্টেম চালু করা হবে তখন কিন্তু উৎপাদনের হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট থাকবে। 

বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর দৃষ্টি দিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সরকারকে সতর্ক করছেন। তারা বলছেন, যে কয়েকটি দেশে নাগরিক বিস্ফোরণে অঘটন ঘটছে বাংলাদেশেও কিছু কিছু দৃশ্যপট রয়েছে। 

বাংলাদেশকে মাথায় রাখতে হবে কয়েকটি দেশ থেকে দেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, রাজনৈতিক বিতর্ক সবসময় থাকে তাই বাংলাদেশ সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর নজর রাখতে হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাজনৈতিক দূরদর্শিতা বিষয় আরো দক্ষতার প্রমাণ রাখতে হবে।’

সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকদের দাবি, বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে। এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। চলমান রাজনীতি নিয়ে কেউ আশাবাদী হওয়া দুরূহ! একটা অনিশ্চিত গন্তব্যের সামনে পুরো বাংলাদেশ। কারণ দেশে রাজনীতি বলে কিছু নেই। 

রাজনৈতিক দলগুলোয় স্বার্থজনিত সমস্যা বেড়েছে, ভাঙনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সবই বাণিজ্যিক, সবই ব্যবসানির্ভর। সে কারণে স্বার্থদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। যেকোনো মুহূর্তে নাগরিকের ক্ষোভের বিস্ফোরণ হতে পারে। 

এ নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক অধ্যাপক বদিউল আলম মজুমদার আমার সংবাদকে বলেন, ‘বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে। এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। চলমান রাজনীতি নিয়ে আশাবাদী হওয়া দুরূহ, একটি অনিশ্চিত গন্তব্য আমাদের সামনে। 

তিনি বলেন, দেশে রাজনীতি বলে কিছু নেই। রাজনৈতিক দলগুলোয় স্বার্থজনিত সমস্যা বেড়েছে, ভাঙনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সবই বাণিজ্যিক, সবই ব্যবসানির্ভর। সে কারণে স্বার্থদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। এখন রাজনীতি ফায়দাভিত্তিক চলছে। সব দলের নেতাকর্মীদের ধারণা ক্ষমতায় থাকলেই লাভবান হওয়া যায়। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক ইস্যুগুলো দেশের নাগরিকের ওপরও প্রভাব ফেলছে। যা কোনোভাবেই সুন্দরের লক্ষণ নয়। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটার পর একটা জাদু দেখিয়ে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু জাদুর সমস্যা হলো, জাদু যতক্ষণ আছে, মানুষ ততক্ষণ মোহমুগ্ধ, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও একের পর জাদু দেখিয়ে যাচ্ছেন তাই মানুষ মুগ্ধ। 

তবে এই মুগ্ধতা শেষ হলে কিন্তু মোহ কেটে যায়।’ সরকারের উচিত সতর্ক হওয়া। দেশের নাগরিকের ভাষা বোঝা। দেশের নাগরিকের সমস্যা দূরীকরণে আরো মনোযোগী হওয়া।

Link copied!