Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

সেবার বদলে বেড়েছে দুর্ভোগ

রায়হান উদ্দিন তন্ময়

আগস্ট ১৮, ২০২২, ০৬:১২ এএম


সেবার বদলে বেড়েছে দুর্ভোগ

রাজধানীর পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা আনতে চালু হয় ঢাকা নগর পরিবহন। ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর রুটে চলাচল করছে এ পরিবহন। তবে সেবার বদলে এই রুটে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। কারণ একই রুটে অন্য কোনো পরিবহন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। নগর পরিবহনে নতুন কোনো বাস যুক্ত না করে বরং এ রুটে বাসের সংখ্যা কমিয়ে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে কাউন্টার স্বল্পতা ও বাসের জন্য দীর্ঘ লাইন।

এরফলে সেবার তুলনায় ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা, এমনকি পরিবহনটির সেবা না বাড়লেও রয়েছে নানা সংকট। যাত্রীরা জানান, এ রুটে নগর পরিবহন চালু হলে প্রথম দিকে শৃঙ্খলা ফিরেছিল। এখন সঠিক তদারকির অভাবে বেড়েছে জনদুর্ভোগ।

পাশাপাশি অন্যান্য বাস চালুরও দাবি জানান তারা। তা না হলে একই ব্যানারের বাসের ওপর ভরসা করে যাতায়াত করতে হয় তাদের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, বাসের কাগজ নবায়ন করার জন্য চলমান রুটে কিছু বাস বন্ধ রয়েছে। নবায়ন সম্পন্ন হলেই বাসগুলো আবারো যুক্ত করা হবে। যাত্রীদের কষ্ট লাঘব করার জন্য এ রুটে আরও ৪০টি বাস যুক্ত করা হবে। ঘাটারচর-কাঁচপুর রুটের পাশাপাশি আরও তিনটি রুট চালু করা হবে। নতুন রুটে চলবে প্রায় ২০০টি বাস।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা নগর পরিবহন নামে বাস চালু করেছিল বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি। উদ্বোধনের আট মাসের মাথায় এ পরিবহনের সেবা কার্যক্রম নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানা জটিলতা। ৫০টি বাস নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও এখন চলছে ৪২টির মতো। ঘাটারচর থেকে বছিলা, মোহাম্মদপুর, শঙ্কর, ঝিগাতলা, সায়েন্সল্যাব, শাহবাগ, প্রেস ক্লাব, মতিঝিল, হাটখোলা, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, মাতুয়াইল, সাইনবোর্ড, সানারপাড় হয়ে কাঁচপুর পর্যন্ত চলাচল করে নগর পরিবহন। কিন্তু এসব এলাকায় বাসের চলাচল খুবই কম বললেই চলে।

এছাড়া কাউন্টারে বাস এলেও যাত্রীর লাইন থাকে লম্বা। কারণ ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর রুটে অন্য বাসের চলাচল বন্ধে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করা হয়। ফলে অন্যান্য বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

তাই এ রুটে যাতায়াতকারীদের এ পরিবহনের ওপরই নির্ভর করতে হয়। এ ছাড়া কাউন্টারে বাস এলেও যাত্রী বেশি থাকায় অনেকে বাসে উঠতে পারেন না। আবার অনেক সময় কম যাত্রী নিয়েও  চলাচল করছে নগর পরিবহন। ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর রুটে যাতায়াত করা কয়েকজন যাত্রী বলেন, আগে এ রুটে রজনীগন্ধা, সিটি লিংকসহ কয়েকশ বাস চলাচল করত। নগর পরিবহন চালু হওয়ায় এসব বাসের রুট পারমিট বাতিল করা হয়।

এদিকে নগর পরিবহনের বাসের সংখ্যা কম, সব জায়গায় যেমন কাউন্টার নেই, পাশাপাশি সব জায়গা থেকে যাত্রী তোলার নিয়ম নেই এটি ভালো। তা ছাড়া কাউন্টারে থাকে অনেক লম্বা লাইন। সব জায়গায় কাউন্টারও রাখা দরকার এমনকি অন্যান্য পরিবহন চলাচলের সুযোগ দেয়া উচিত। এতে আমাদের যাতায়াত সহজও হবে।

তরুণ নামের এক যাত্রী এ প্রতিবেদককে বলেন, মনে করেছিলাম নগর পরিবহন চালু হলে যাতায়াত সহজ হবে। এখন তো উল্টো। কারণ সবসময় বাস পাওয়া যায় না, পেলেও বাসে উঠা যায় না। রাত ৯টার পর বাস চলাচল না করার কারণে সিএনজি বা অন্য রুট দিয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে বাসায় যেতে হয়। এ রুটে অন্যান্য পরিবহনের বাস চালু করার দাবি জানাচ্ছি।

মতিঝিল কাউন্টারে বাসের জন্য অপেক্ষা করেন লিমন। তিনি জানান, নগর পরিবহন চালুর পর এ রুটে শৃঙ্খলা এসেছিল। এখন বাস কম হওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে। তা ছাড়া কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে এ সেবাটি নানা সংকটে পড়ছে।

দৈনিক বাংলা মোড়ের কাউন্টার মাস্টার জানান, এ রুটে বাস চলে ৪২টি। ১৫-২০ মিনিট পরপর বাস আসার কথা থাকলেও জ্যামের কারণে আসতে দেরি হয়। রাত ৯টা বা সাড়ে ১০টার পর নগর পরিবহন চলে না। সব জায়গায় আমাদের কাউন্টার নেই। নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় কাউন্টার রয়েছে।

কাঁচপুর যাত্রী ছাউনিতে থাকা টিকিট বিক্রেতা জামান বলেন, গত জুনের পর থেকে নগর পরিবহন লোকসানে পড়ছে এ অভিযোগ এনে বাসের সংখ্যা কমিয়ে ফেলতেছে। অথচ এ রুটে অনেক যাত্রী চলাচল করে। কাউন্টারে বাস সময়মতো না আসা ও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার কারণে অনেক যাত্রী অন্য মাধ্যম বা অন্য রুট ব্যবহার করে চলে যায়।  

এ বিষয়ে ডিটিসিএর ডেপুটি ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানার ধ্রুব আলম আমার সংবাদকে বলেন, বাসের কাগজ নবায়ন করতে গিয়ে এই রুটে কিছু বাস সংকট রয়েছে। তবে আবারো ৫০টি বাসই চলবে। সামনে ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর রুটে আরও ৪০টি বাস নামানো হবে। তখন যাত্রীদের কষ্ট লাঘব হবে। এছাড়া নগর পরিবহনের আরও তিনটি রুট চালু হচ্ছে। সেখানে প্রায় ২০০টি বাস চলবে।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রেশনালাইজেশন কমিটির সদস্য খন্দকার এনায়েত উল্লাহ আমার সংবাদকে বলেন, ‘রেশনালাইজেশন কমিটির সদস্য তবে নগর পরিবহনের বাসের বিষয়ে কিছু না। আপনি সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসা করেন।’

Link copied!