Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

বিএনপিকে ছাড় দেবে না আ.লীগ

মাসুদুল হাসান অলড্রিন

মাসুদুল হাসান অলড্রিন

নভেম্বর ২৯, ২০২২, ১২:৫৭ এএম


বিএনপিকে ছাড় দেবে না আ.লীগ

১০ ডিসেম্বর ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ক্রমেই অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হচ্ছে। সমাবেশ নিয়ে অনড় অবস্থানে বিএনপি। অন্যদিকে ওই দিন পুরো ঢাকাতেই ব্যাপক লোক সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

দলটির নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির সমাবেশের দিন যেকোনো উপায়ে রাজধানীকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে মরিয়া আওয়ামী লীগ।

এদিকে বিএনপিকে মোকাবিলা করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছেন মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। কোনোভাবেই তারা বিএনপিকে ছাড় দিতে নারাজ। তবে বিএনপির সমাবেশের আগের দিন ৯ ডিসেম্বর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে বিশাল জনসমাবেশের আয়োজন করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।

সূত্র জানায়, এতে কয়েক লাখ লোকের সমাবেশ ঘটাবে। জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির জানান, ১ ডিসেম্বর সকাল থেকেই মহানগর দক্ষিণের প্রতিটি মহল্লা, ওয়ার্ড ও থানার সব নেতাকর্মী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে। বিএনপি এদিন কোনো নাকশকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। তবে বিরোধী দলের সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ।

সংগঠনের সভাপতি বজলুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে ঢাকার সব থানা  ইউনিটে শান্তি সমাবেশ করে লোক সমাগম ঘটিয়ে নেতাকর্মীদের চাঙা রাখছেন তারা। এর ধারাবাহিকতায় ৬ অথবা ৯ ডিসেম্বর বিশাল সমাবেশ করবে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। সমাবেশের ভেন্যু এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে  শ্যামলী কিংবা আগারগাঁও বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্র সংলগ্ন মাঠে এর আয়োজনের সম্ভাবনা আছে বলে তিনি জানান।

১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি সমাবেশ করবে এটি গণতন্ত্রের জন্য ভালো দিক, যদি সেটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হয়। মানুষ তাদের সমাবেশ শুনলে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। কারণ বিএনপি সবসময়ই সভা-সমাবেশ মিছিলের নামে জনগণের জান-মালের ক্ষতি করে, নৈরাজ্য  সৃষ্টি করে। ঢাকাতে লাখ লাখ লোকের সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। এত জনপ্রিয়তা, তাহলে নির্বাচনে আসতে ভয় কি তাদের? মূলত তারা সহিংসতার মাধ্যমে দেশটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে তৃতীয় শক্তিকে উসকানি দিয়ে অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতায় আসতে ব্যস্ত। এ কারণেই বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায়, মিডিয়াতে বাগাড়ম্বর করে বেড়ায়। তারা ২০০৬ সালের মতো একটি পুতুল সরকার ক্ষমতায় আনতে মরিয়া। সব বিরোধী জোট মিলে এই মূহূর্তে নির্বাচনে এলে, শেখ হাসিনা ৮০ শতাংশ ভোট পাবেন।’    

১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কর্মসূচি কি হবে— এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘দলছুট নেতাদের নিয়ে আন্দোলন সমাবেশ করছে বিএনপি, সেখানে সাধারণ জনগণের কোনো সম্পৃক্ততাই নেই। নিজস্ব কিছু নেতাকর্মী ও ভাড়াটে লোক ছাড়া, সাধারণ জনগণের সমাবেশ ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। বিএনপি সৃষ্টির সময় থেকে এখনো গণমানুষের সমর্থন পায়নি, পাবেও না। কারণ তারা জিয়া পরিবার ছাড়া জনগণের ইস্যু নিয়ে কখনো সরব ছিল না। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিএনপি নেতারা বাগাড়ম্বর করছে। ঢাকা শহরে তারা ৫০ হাজার লোক জড়ো করতে পারবে না।’

এক সময়কার তুখোড় এই ছাত্রনেতা আরও বলেন, ‘মিথ্যা ও চমকপ্রদ তথ্য জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া বিএনপির অন্যতম অ্যাজেন্ডা। বিএনপি সাংগঠনিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল ও নাজুক অবস্থায় আছে। অন্যদিকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দারুণভাবে ঐক্যবদ্ধ।’

আওয়ামী লীগ কোনো পাল্টা কর্মসূচি দেবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে বি এম মোজাম্মেল হক জানান, আওয়ামী লীগ তাদের সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনসহ বিজয়ের মাসের নানা কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করবে। বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে তারা ভাবছেন না।

বিএনপি গত সমাবেশগুলোতে তেমন কোনো জনসমাগম ঘটাতে পারেনি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল বলেন, ‘একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করে দেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় বিএনপি, মূলত তাদের কোনো সমাবেশ সফলতার মুখ দেখেনি, ন্যূনতম লোক সমাগম ঘটাতে ব্যর্থ হচ্ছে তারা। বিএনপি গত সমাবেশগুলোতে তেমন কোনো জনসমাগম ঘটাতে পারেনি। কারণ জনগণ তাদের সাথে নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘খুলনার সমাবেশে একটি রাস্তায় মাত্র ১০ হাজার লোক জড়ো করতে পারেনি তারা, জনগণ তাদেরকে সাড়া দিচ্ছে না। সর্বশেষ সিলেটের সমাবেশে মাত্র কয়েক হাজার লোক জড়ো হয়েছে। অথচ এটি ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।’

এস এম কামাল আরও বলেন, ‘ঢাকার সমাবেশে জনগণ সাড়া দেবে না। ১০ ডিসেম্বর বিএনপি কোনো নাশকতা করার চেষ্টা করলে, তাদের কবর রচনা  হবে।’

Link copied!