Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ছেঁড়া দ্বীপে পর্যটকের ভিড়

ডিসেম্বর ১৫, ২০২১, ০৩:৪০ পিএম


নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ছেঁড়া দ্বীপে পর্যটকের ভিড়

সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপ অংশে এখনো জীবিত থাকা কিছু সামুদ্রিক প্রবাল সংরক্ষণের জন্য পর্যটকদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় সেন্ট মার্টিনে ছয় ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। গত বছরের ১২ অক্টোবর মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক পরিপত্রে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় কোস্টগার্ডকে। ছেঁড়া দ্বীপের প্রবেশমুখে লাগানো হয়েছে নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত সাইবোর্ড। 

কিন্তু এসব নির্দেশনা মানছে না কেউ। নজরদারির জন্য নেই কোস্ট গার্ড কিংবা টুরিস্ট পুলিশ। বাধাহীনভাবেই ছেঁড়া দ্বীপে যাচ্ছেন হাজার হাজার টুরিস্ট। এদের মধ্যে অনেকেই জানেন না নিষেধাজ্ঞার কথা। যারা জেনেও যাচ্ছেন তাদের দাবি, ফেসবুক থেকে জানতে পেরেছি ছেঁড়া দ্বীপে যাওয়া নিষেধ। কিন্তু কেন নিষেধ, কত দিনের জন্য নিষেধ, নিষেধাজ্ঞা এখনো আছে কিনা কিছুই জানি না। 

গত (১৩ ডিসেম্বর) সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বাইসাইকেল, অটোরিকশা, বীচ মটোর , ট্রলার ইত্যাদি যানবাহনে হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেছেন ছেঁড়া দ্বীপে। প্রবেশ পথে নেই কোন চেক পোস্ট। নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত সাইন বোর্ড আছে তবে তা প্রবেশ পথে নয়। সাইন বোর্ড আছে ছেঁড়া দ্বীপে। অর্থাৎ ছেঁড়া দ্বীপে গিয়ে পর্যটকরা জানতে পারছেন সেখানে যাওয়া নিষেধ।

শাকিলা ঊর্মি নামের একজন আমার সংবাদকে বলেন, নিষেধাজ্ঞা আছে জানতাম না। এখানে এসে দেখি সাইনবোর্ড। তবে কেন নিষেধ তা সাইনবের্ডে লেখা নেই তাহলে আমরা সচেতন হব বা অন্যকে সচেতন করব। 

জাহিদুল ইসলাম নামের একজন পর্যটক আমার সংবাদকে বলেন, আমি ফেসবুকে নিষেধাজ্ঞার কথা জানতে পেরেছি। কিন্তু এখানে এসে দেখি সবাই আসছে কোন বাধা নেই। ভাবলাম নিষেধাজ্ঞা হয়তো তুলে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কেন এখানে আসা নিষেধ তাও জানি না। 

[media type="image" fid="153656" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সেন্ট মার্টিনের সৈকতে কোনো ধরনের যান্ত্রিক যানবাহন যেমন- মোটরসাইকেল ও ইঞ্জিনচালিত গাড়ি চালানো যাবে না। রাতে সেখানে আলো বা আগুন জ্বালানো যাবে না। রাতের বেলা কোলাহল সৃষ্টি বা উচ্চ স্বরে গানবাজনার আয়োজন করা যাবে না। টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতকারী জাহাজে অনুমোদিত ধারণ সংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। অননুমোদিত এবং অনুমোদনের অতিরিক্ত নির্মাণসামগ্রীর মালামাল সেন্টমার্টিনে যাতায়াত বন্ধ করা হবে। পরিবেশদূষণকারী দ্রব্য যেমন পলিথিন ও প্লাস্টিকের বোতল ইত্যাদির ব্যবহার সীমিত করা হবে।

কিন্তু এসবের কোন আলামত নেই সেন্ট মার্টিনে। সবাই চলছে বাঁধাহীনভাবে। দেখার যেন কেউ নেই।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, দ্বীপটি পর্যটকদের অনিয়ন্ত্রিত কার্যক্রমের কারণে মারাত্মক ধ্বংসের মুখে রয়েছে। দেশের একমাত্র ওই প্রবাল দ্বীপের জীববৈচিত্র্য এবং বনভূমি মারাত্মক দূষণের শিকার হচ্ছে। ফলে শুধু ছেঁড়া দ্বীপ না, সেন্ট মার্টিনেই পর্যটকদের যাতায়াত আপাতত নিষিদ্ধ করা উচিত।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ‘সেভ আওয়ার সি’ এর মহাসচিব আনোয়ারুল হক বলেন, ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপে এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধে উদ্যোগের কথা আগেও শুনেছি। কিছু লোকদেখানো কার্যক্রম নেওয়া হলেও পরে তা মানা হয় না। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা একেবারেই স্পষ্ট। কাজেই লোকদেখানো কার্যক্রম না নিয়ে দ্বীপটি রক্ষায় বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

আমারসংবাদ/আরএইচ/এমএস