নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের নামে ‘ইসলামবিরোধী চক্রান্ত’, হেফাজতের হুঁশিয়ারি

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ৩, ২০২৫, ১২:১০ পিএম

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটির দাবি, ‘এই কমিশনের নামে ইসলামবিরোধী চক্রান্ত চালানো হচ্ছে। কুরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো নীতিকে এ দেশের মুসলমানেরা বরদাশত করবে না।’

আজ শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে সংগঠনের শীর্ষ নেতারা একবাক্যে এই দাবি জানান। বক্তারা বলেন, ‘সরকার কমিশন গঠন করলেও এখনো কমিশনের সদস্যদের পরিচয় পরিষ্কার নয়। অথচ তারা এমন সব প্রস্তাব দিয়েছে, যা ইসলামি শরিয়াহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

হেফাজতের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে দলটির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন। হাজারো অনুসারীর উপস্থিতিতে দিনভর চলে এ কর্মসূচি।

হেফাজতের মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এই সংস্কারের নামে ১৮ কোটি মুসলমানের ধর্মীয় চেতনাকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। কমিশনের প্রতিবেদন বাতিল না হলে হেফাজত জীবন দিয়ে হলেও তা রুখে দেবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অত্যাচার সয়েছি, জেল খেটেছি। কিন্তু যাঁরা ইসলাম অবমাননার ছক কষছেন, তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে না।’

সমাবেশ থেকে হেফাজতের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো—

১. নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও প্রতিবেদন বাতিল।

২. ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে গণহত্যার তদন্তে কমিশন গঠন।

৩. হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার।

৪. ফিলিস্তিন ও ভারতের মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে সরকারের কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ।

বক্তারা অভিযোগ করেন, ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ড কিংবা ২০০৭ সালের আন্দোলনের ঘটনার জন্য যেমন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে, তেমনি শাপলা চত্বরে সংঘটিত গণহত্যার বিচার করতেও কমিশন গঠন জরুরি।’

কমিশনের প্রতিবেদন বাতিল না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতারা। তাঁরা বলেন, ‘এই দেশে ইসলামবিরোধী কোনো সংস্কার বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না। সরকার সময় থাকতেই সিদ্ধান্ত বদল করুক, না হলে রাজপথের দায়িত্ব হেফাজত নেবে।’

মহাসমাবেশে বক্তারা ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন ও ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সরকারের ‘নীরব ভূমিকা’ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিআরইউ