‘নারীর ডাকে মৈত্রীযাত্রা’

জাতীয় নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী করার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২৫, ০৮:২৪ পিএম

নারী অধিকার এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিত 'নারীর ডাকে মৈত্রীযাত্রা' থেকে একটি ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়েছে। এতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলসমূহের প্রতি শতকরা ৩৩ ভাগ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে ঘোষণা করা হয়, “আমরা এমন এক বাংলাদেশ চাই, যেখানে বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ একসাথে লড়বে এবং সকলের জন্য মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত হবে।”

ঘোষণাপত্রে বলা হয়, চব্বিশের 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান'-এর পর দেশের প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য এই যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নেন বিভিন্ন পেশাজীবী, মানবাধিকারকর্মী, শ্রমজীবী নারী, চা শ্রমিক, যৌনকর্মী, তৃতীয় লিঙ্গ, প্রতিবন্ধী, আদিবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা।

নারীর প্রতি সহিংসতা ও রাজনৈতিক পরিসরে বাধা প্রসঙ্গে উদ্বেগ ঘোষণাপত্রে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, “অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়েও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী ও পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা নারীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। রাজনৈতিক পরিসরে নারীর অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে, অনলাইন হয়রানি ও সরাসরি সহিংসতা এখন নিত্যদিনের ঘটনা।”

এছাড়াও, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশকে ঘিরে পরিকল্পিত অপপ্রচার, বিভ্রান্তি ছড়ানো এবং কমিশন সদস্যদের বিরুদ্ধে অশোভন আচরণ নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

ঘোষণাপত্রে উত্থাপিত মূল দাবি তিনটি হলো

১. সহিংসতা ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ:
অন্তর্বর্তী সরকারকে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, গুজব ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।

 ৩৩% নারী প্রার্থীর নিশ্চয়তা

নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী রাজনৈতিক দলগুলোকে নারী, শ্রমিক, ধর্ম, ভাষা ও লিঙ্গীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার সম্পর্কে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। বিশেষ করে, প্রার্থীদের অন্তত ৩৩ শতাংশ নারী হতে হবে।

ক্ষমতায়নের উদ্যোগ

নারী ও প্রান্তিক জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে তাৎক্ষণিক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়, “আমরা কোনো বিভ্রান্তি বা হুমকির মুখে পিছু হটবো না। অধিকার ও মর্যাদার জন্য আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। আমরা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নারী বিষয়ক অবস্থান নজরদারিতে রাখবো এবং যারা জুলুম-নিপীড়নের কাঠামো টিকিয়ে রাখে, তাদের রুখে দাঁড়াবো।”

শেষে বলা হয়, “আমরা ইতিহাস, ধর্ম এবং সংস্কৃতির অপব্যাখ্যার নামে সহিংসতা ও বৈষম্যকে বৈধতা দিতে দেবো না। আমরা এক ন্যায়ভিত্তিক ও সমতাভিত্তিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের আন্দোলনে অটল থাকবো।”

ইএইচ