দুদক চেয়ারম্যান

উপদেষ্টারা যদি দুর্নীতি করেন, ছাড় নেই

রংপুর ব্যুরো প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৫, ০৬:৫৩ পিএম

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার। তার অধীনে থাকা কোনো উপদেষ্টার নামে যদি দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।

মঙ্গলবার রংপুর নগরীর স্টেশন রোডে দুদকের বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “দেশের কয়েকটি পত্রিকায় কয়েকজন উপদেষ্টার নামে খবর প্রকাশ পেয়েছে। তবে কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে তা সুনির্দিষ্ট হতে হবে। শুধু বলা হবে, কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বা দুর্নীতি করেছেন—এভাবে অভিযোগ করলে হবে না। বলতে হবে, কোথা থেকে ও কীভাবে করেছেন। এই বিষয়গুলো প্রমাণ না থাকলে অভিযোগ টিকবে না।”

তিনি আরও বলেন, “উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসে, তা আমাদের কাছে নিয়ে আসুন। আমরা আমাদের কাজ সঠিকভাবে করছি কি না, সেটাও লক্ষ রাখবেন। ঠিকভাবে না করলে সমালোচনা করারও সুযোগ আছে।”

দুদক চেয়ারম্যান প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জোরালো ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখ করে জানান, “তার উপদেষ্টা পরিষদের কেউ দুর্নীতি করলে প্রধান উপদেষ্টা বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নন।”

তিনি বলেন, “শুধু শাস্তি দিয়ে দুর্নীতি পুরোপুরি নির্মূল সম্ভব নয়। সেবাদাতা ও সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে আন্তরিকতা ও সুসম্পর্ক গড়ে উঠলে দুর্নীতি অনেকাংশে লাঘব হবে। দুদক সেই যোগাযোগ স্থাপনে কাজ করছে।”

দুদক চেয়ারম্যান জানান, “গত এক বছরে অনেক মামলা হয়েছে। পুরনো অনেক মামলা, যা আগে ধামাচাপা ছিল, সেগুলো পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। নতুন মামলাগুলোও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া সেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।”

শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “দুর্নীতি কমিশনের নিজস্ব কিছু বিধিবদ্ধ আইন রয়েছে, যার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। দুর্নীতি বাংলাদেশের অনেক রূপ আছে, তবে আমাদের সীমাবদ্ধতাও আছে। আমরা সরকারি সংস্থা হিসেবে টাকা পাচার, অবৈধ আয় বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা চলমান ও আরও কিছু তদন্তাধীন। প্রমাণ পাওয়া গেলে মামলা করা হবে।”

তিনি আরও জানান, “দুদকের ঝুলে থাকা মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ শেষে রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন দুদক চেয়ারম্যান। এতে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম এনডিসি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, পুলিশ সুপার আবু সাইমসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা।

ইএইচ