চরফ্যাশনের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

দক্ষিণ আইচা (ভোলা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২২, ০৩:১১ পিএম

বৈরী আবহাওয়া অস্বাভাবিক জোয়ারে নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে উচ্চতা ৩/৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার অন্তত ২০থেকে ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুর্ভোগে রয়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ।

জানা গেছে, গত শুক্রবার দুপুর থেকে বৈরী আবহাওয়া শুরু হয়। বৈরী আবহাওয়ার কারণে বাড়তে শুরু করে নদ-নদীর পানির উচ্চতা। বেড়েছে বাতাসের চাপও। গ্রামের সড়কগুলো প্লাবিত হওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। এ ছাড়া ফসিল জমি, মাছের ঘের, পুকুর ডুবে গেছে। ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।

জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে জোয়ারের ঢেউয়ের ঝাপটায় চরমানিকা ইউনিয়নের নবীনগর সড়কসহ বেশ কিছু সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে, সেই সাথে গাছপালা এবং দোকারঘর ভেঙে গেছে।

এদিকে বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে কোমরপানিতে ডুবে রয়েছে ঢালচর, চর কুকরি মুকরি, চরপাতিলা, চরনিজাম, চরমাদ্রাজ, জাহানপুর, মুজিবনগর, নজরুল নগর, হাজারীগঞ্জ ও চরমানিকা ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকা। দিনে-রাতে দুবার জোয়ারের পানি প্লাবিত হওয়ায় বেড়ির বাইরে থাকা পরিবারগুলো রান্নাবান্না করতে না পেরে অর্ধহারে-অনাহার মানবেতর জীবনযাপন পার করছে। তবে দুইদিন ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে পানিবন্দি মানুষদের কোনো ধরণের সহযোগিতা করা হয়নি বলে অভিযোগ জোয়ারে প্লাবিত নিম্নাঞ্চলসহ বেড়িবাঁধের বাইরের এলাকার পরিবারগুলোর।

চরপাতিলার গ্রামের মোঃ ইউছুফ বলেন, তিন -দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছি। দিনে-রাতে দুবার জোয়ারের পানি ওঠে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চৌকিতে বসে রাত পার করতে হয়।

চর মানিকা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের বাহিরের মো.মনির হোসেন, জসিম,ও হারুন বলেন, তিন দিন ধরে জোয়ারের পানিতে বসতঘর, অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদের বিটা ডুবে রয়েছে। শিশুসহ গবাদিপশু নিয়ে খুব বিপদে রয়েছি। গরু, ছাগল কোনো মতে ঘরের মধ্যে বেঁধে রেখেছি। আবার অনেকের হাঁস, মুরগি, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। দিনের তুলনা রাতে জোয়ার বেড়ে যায়। এতে পরিবার নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। জোয়ারের পানি বেড়ে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। পানির কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছি না। আমাদের এখানে বেড়িবাঁধ না থাকায় নদীর পানি খুব দ্রুত প্রবেশ করে এসব এলাকায়, বেড়িবাধ নির্মাণের দাবি জানান তারা।

ঢালচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল ছালাম হাওলাদার জানান, তাদের বেশির ভাগ গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারের সময় গ্রামের সড়কগুলো পানিতে ডুবে যাচ্ছে। ডুবে যাচ্ছে অনেক বসতঘরের ভিটাও। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। গবাদীপশু নিয়ে কৃষকরা বিপদে আছে। ক্ষেতের ফসলও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। পুকুর আর খামারের বেশির ভাগ মাছ ভেসে গেছে।

চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল নোমান রাহুল বলেন, মূলত বৈরী আবহাওয়ার কারণেই নদ নদী পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত চরাঞ্চলসহ নদীসংলগ্ন এলাকাগুলোর খোঁজখবর নিয়ে তালিকা করা হবে। এবং যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষী পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি।

কেএস