পাঁচবিবিতে বাঁধাকপি চাষে ব্যস্ত কৃষক

পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২২, ০৫:২২ পিএম

আগাম জাতের বাঁধাকপি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন পাঁচবিবি উপজেলার কৃষকেরা। বিশেষ পদ্ধতিতে রোপণ করা আগাম জাতের এ বাঁধাকপির ফলন বেশি হওয়ায় এই কপি চাষ করে লাভের মুখ দেখার প্রত্যাশা উপজেলার চাষিদের।

উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা আগাম জাতের ধান কেটে, আগাম কপি রোপন করেছে। আবহাওয়া অনুকূল ও কপিতে কোন রোগ বালাই না হলে এবার ভালো ফলন ও লাভের আশা করছেন চাষিরা। বাঁধাকপি চাষে বিঘা প্রতি মোট খরচ প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। ভাল বাজার দর পেলে ক্ষেত থেকে পাইকারী দরে বিঘায় এক লাখ টাকার কপি বিক্রি‘র আশা করছেন চাষিদের। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে এবার ব্যাপকভাবে চোখে পড়েছে আগাম বাঁধাকপি চাষের চিত্র। বাম্পার ফলনের সঙ্গে আশা কাঙ্খিত দরের।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় ১২০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের বাঁধাকপি চাষ করা হচ্ছে।

সরেজমিনে পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নের খোর্দ্দা গ্রামের ছোট যমুনা নদীর তীরবর্তি গঙ্গাপ্রসাদ মাঠে পড়ন্ত বিকেলে বাঁধাকপি চাষি হাজেরা বিবি-র সাথে কথা হয়।

তিনি জানায়, এই বছর ১ বিঘা জমিতে বাঁধাকপি লাগিয়েছেন। কোন দূর্যোগ না হলে সেখান থেকে অন্তত ১ লাখ টাকা লাভ থাকবে। একই গ্রামের শ্রী প্রদীপ চন্দ্র একই মাঠে ১০ কাঠা জমিতে আগাম বাঁধাকপি চাষ করেছেন। তিনি জানালেন, ১০ কাঠায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা লাভ থাকবে। গ্রামের সবজি চাষিরা জানান, কৃষি বিভাগ যথেষ্ট দেখভাল করছে। তাদের পরামর্শে সময় মতো সার, ওষুধ, সেচ দিয়ে বাঁধাকপি চাষ করা হচ্ছে। আবহাওয়া ভাল থাকলে প্রতি বিঘার ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার কপি বিক্রি হবে। জমি থেকে আগাম কপি সংগ্রহ করা সম্ভব হলে দাম ভাল পাওয়া যায়। কেননা মৌসুমের শুরুতে কপির চাহিদা ও দাম ভাল থাকে।

উপজেলার কুটাহারা গ্রামের সাইদার রহমান হাইব্রিড ও দেশী দুই জাতের বাঁধাকপি প্রচুর পরিমানে আবাদ করেন। তিনি বলেন, আমরা প্রতি বিঘায় ৪০০০-৪৫০০ পিচ বাঁধাকপির চারা লাগাই।

পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান জানান, বিশেষ করে আগাম বাঁধাকপি চাষ নিয়ে কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে। কারণ গত বছর তারা ১ বিঘা বাঁধাকপি চাষ করে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পেয়েছে। লাভের আশায় কৃষক এ আগাম কপি চাষে আগ্রহী। আমরা মাঠ পর্ষায়ে চাষিদের বাঁধাকপির ভালো ফলনের জন্য বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছি। বিশেষ করে কোন ধরনের পরিচর্যা নিতে হবে, কখন সেচ, সার, ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। সার্বক্ষণিকভাবে মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন পরামর্শ পেয়ে কৃষকরা দারুণ খুশি। আগাম জাতের কারণে পরিচর্যার বিষয়ে কিছু পার্থক্য আছে, সেই সব বিষয়গুলো আমরা কৃষকদের অবহিত করছি।

তিনি আরো জানান, আমরা সবসময় কৃষকদের নিয়েই মাঠে আছি। প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিযুক্ত রয়েছেন কৃষকের পরামর্শ প্রদানের জন্য। এবং যে ক্ষেতের ফসল ভাল হয় সেই ক্ষেতকে আমরা প্রদর্শনী ক্ষেত হিসেবে সাইনবোর্ড লাগিয়ে চিহ্নিত করি।

কেএস