৮১ জনের মৃত্যু ঘটনায় মাদক ব্যবসায়ীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ

মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২২, ০৭:২০ পিএম

১৯৯৮ সালে গাইবান্ধায় ভয়াবহ মাদক ট্রাজেডির বিষাক্ত মদ্যপানে ৮১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় মাদক বিক্রেতা রবিন্দ্রনাথ সরকার ওরফে রবির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।  

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: আবুল মনসুর মিয়া এই আদেশ দেন।

বিষয়টি আমার সংবাদকে নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) এ্যাডভোকোট ফারুক আহম্মেদ প্রিন্স। তিনি বলেন, আজ থেকে ২৪ বছর আগে ১৯৯৮ সালের পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের  রাতে মদ্যপানে আনন্দ উল্লাসহ ফুর্তিতে মেতে ওঠেন গাইবান্ধার অনেক মানুষ। মদ্যপায়ীরা সকলেই ষ্টেশন রোডের ন্যাশনাল হোমিও হল বরিন্দ্রনাথ সরকারের কাছ থেকে এসব রেকটিফায়েট স্পীট কিনে পান করেছিলেন। ওই সময় বেশি লাভের আশায় রবিন্দ্র নাথ সরকার তার দোকানে এবং বাড়িতে মজুত রাখা স্পীটে বিষাক্ত মিথানল মিশ্রিত রেকটিফায়েট স্পীট বিক্রি করেন। ওই সব খাওয়ার পর মদ্যপায়ীদের অনেকেই অসুস্থ্য হয়ে পড়লে, তাদেরকে গাইবান্ধা জেলারেল হাসপাতাল আবার কিছু আহত ব্যক্তিকে রংপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে এ ঘটনায় ওই সময়েই মিলন, কাবলু, ডাবলু, ললিতা রানী, কান্তি ও সুমিতারানীসহ ১১ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়াও হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্য ও গোপনে অন্তত ৭০ জনের মৃত্যু খবর পাওয়া যায়। ওই মদ্যপানে প্রাণে বেঁচে গেলেও অন্ধত্বও বরণ করেন নারী-পুরুষের অনেকেই।

পরবর্তীতে এ ঘটনায় ওই বছরের ১৬ এপ্রিল রবিদাস সম্প্রদায়ের সর্দ্দার মুন্নী বাঁশফোর বাদী হয়ে গাইবান্ধা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার খবরেই মাদক ব্যবসায়ী রবিন্দ্রনাথ পরিবারকে রেখে পালিয়ে যায়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন গাইবান্ধা সিআইডির পরিদর্শক আবেদ আলী তদন্ত শেষে রবিন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন । পরে আদালতে দীর্ঘ শুনানী ও স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ওই বিষাক্ত মদ্যপানে ১১ জন ছাড়াও শতাধিক ব্যক্তির মৃত্যু ও অনেকেই অন্ধত্ব বরণ করার ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় মাদক বিক্রেতা রবিন্দ্রনাথ সরকার ওরফে রবির বিরুদ্ধে আজ মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয় আদালত।

কেএস