চাঞ্চল্যকর মামলার জট খুললেন পিবিআই উপ-পরিদর্শক শহিদুল

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৩, ০৭:০৫ পিএম
  • ডিবি পরিচয়ে প্রবাসীর মালামালসহ প্রাইভেটকার ছিনতাই
  • ছিনতাই চক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার, গাড়ি ও মালামাল উদ্ধার

সাভারের আশুলিয়া রুটে ভয়ঙ্কর একটি ছিনতাইকারী চক্রকে কব্জা করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা জেলা। চক্রটি ডিবি পরিচয়ে ছিনতাই করে আসছিল। এতে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী হয়; অপরদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছিল।

পিবিআইয়ের পুলিশ উপ-পরিদর্শক মো. শহিদুল ইসলামের অসাধারণ দক্ষতায় চক্রটিকে শনাক্ত করে এক বছরের বেশি সময় আগে ছিনতাই হওয়া মাইক্রোবাসসহ বিপুল মালামাল উদ্ধার হয়েছে। আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ায় চাঞ্চল্যকর মামলাটির জট খুলেছে। যা দীর্ঘ সময় ধরে থানা পুলিশ তদন্ত করেও সুরাহা করতে পারছিল না।

পিবিআই ঢাকা জেলা সূত্রে জানা যায়, সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরা প্রবাসীকে বহনকারী প্রাইভেটকার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় চক্রের দুই সদস্যকে কারাগার থেকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে (শোন অ্যারেস্ট) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা জেলা।

পিবিআই বলছে, তারা পেশাদার ছিনতাই চক্র। চক্রে চার থেকে পাঁচজন সদস্য রয়েছে। যারা গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে সাভার, আশুলিয়া, টাঙ্গাইলসহ ডিএমপি’র বিভিন্ন থানা এলাকায় এবং মহাসড়কে ডাকাতি করত। পুলিশ পরিচয়ে গাড়ি থামিয়ে চালক ও যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে হত্যার হুমকি দিয়ে হাত-পা বেঁধে মালামাল ও গাড়ি ছিনতাই করে নিয়ে যেত।

আসামিরা ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে একটি হায়েস মাইক্রোবাযোগে আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় এয়ারপোর্ট থেকে সৌদি প্রবাসীকে বহনকারী একটি প্রাইভেটকার ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তল্লাশি করবে মর্মে সিগন্যাল দিয়ে থামায়। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রাইভেটকারে থাকা যাত্রী ও চালকদের হাত-পা বেঁধে সর্বস্ব লুটের ঘটনায় মামলা তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পিবিআই ঢাকা জেলা।

সংস্থাটি জানতে পারে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িতরা অপর এক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছে। পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখিয়ে হেফাজতে নেয় পিবিআই উপ-পরিদর্শক শহিদুল।

এরপর মো. সোহাগ ওরফে ভাগিনা সোহাগ ও মো. শরিফুল ইসলামকে কারাগার থেকে রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আসামিরা সাভার থানার আরেকটি মামলায় কারাগারে ছিলেন। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার প্রবাসীর মালামাল ও তাকে বহনকারী গাড়ি উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআইয়ের ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মীর মো. শাফিন মাহমুদ।

পিবিআইয়ের তদন্তে জানা গেছে, গ্রেপ্তার সোহাগ ও শরিফুল পেশাদার ছিনতাইকারী দলের সদস্য। গত তিন বছর ধরে তারা পুলিশ, ডিবিসহ বিভিন্ন বাহিনীর পরিচয় ব্যবহার করে ছিনতাই করে আসছিল। এমনকি মামলার বাদী আব্দুল মালেকের গাড়ি ছিনতাই করে নেওয়ার পরে সেই গাড়ি ব্যবহার করে গত এক বছর ধরে ছিনতাই করে আসছিল। তবে কতটি অপরাধ ঘটিয়েছে সেটি জানতে চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে পিবিআই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই, ঢাকা জেলার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শহিদুল ইসলাম আমার সংবাদকে বলেন, ‘আসামি সোহাগ ওরফে ভাগিনা সোহাগের বিরুদ্ধে সাভার, আশুলিয়া ও ঢাকার বিভিন্ন থানায় অন্তত আটটি মামলা রয়েছে। শরিফুলের বিরুদ্ধে রয়েছে তিনটি মামলা। গত বৃহস্পতিবার শরিফুল এই মামলায় নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।

এমআরএইচ/টিএইচ