শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ

নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: মে ৫, ২০২৪, ০১:২২ এএম
  • যেসব অভিযোগে নোয়াখালী থেকে বদলি হন শেরপুরে, এখানেও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর মাধ্যমে করছেন একই অনিয়ম
  • ঠিকাদারদের কাছ থেকে কিনে নেন কাজ
  • সওজের যন্ত্রপাতি ও যানবাহন ভাড়ার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দেয়ার অভিযোগ

এসব অভিযোগ উদ্ভট ও টোটালি রং 
—বললেন নির্বাহী প্রকৌশলী   

অনিয়মের কারণে আগের কর্মস্থল নোয়াখালী থেকে বদলি করে শেরপুর পাঠনো সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলামের পিছু ছাড়ছে না অনিয়ম। তার অনিয়মের ফলে নোয়াখালীর পর এখন ব্যাহত হচ্ছে শেরপুর জেলার উন্নয়নমূলক কাজ। ঠিকাদারদের কাছে অর্থলোভী আর জেলার বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছে অযোগ্য প্রকৌশলী হিসেবেও আলোচিত হচ্ছেন তিনি। তবে এসবের কোনো পরোয়াই করেন না তিনি। বরং উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলামের সহযোগিতায় অনিয়মের মহাসড়ক দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেন দ্বিধাহীনভাবে। 

জানা গেছে, নোয়াখালীতে টেন্ডারে অনিয়ম ও পছন্দের লোকদের কাজের রেট প্রকাশ করে গোপন তথ্য দেয়াসহ ইজিপিতে জয়ী ঠিকাদারদের কাছ থেকে চুক্তি করার সময় বিপুল অংকের টাকা দাবি ও আদায় করতেন এই নির্বাহী প্রকৌশলী। এমতাবস্থায় নোয়াখালী থেকে অল্পদিনের জন্য পোস্টিং হলেও অভিযোগের বোঝা মাথায় নিয়েই বদলি হয়ে যান শেরপুরে। অথচ সেখানেও করছেন একই কাজ। উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলামের মাধ্যমে জামালপুরের ঠিকাদারদের কাজ দেয়ার মাধ্যমে শেরপুরেও অব্যাহত রেখেছেন নোয়াখালীর ধারা। সামপ্রতিক সময়ে মেরামত কাজের অংশগ্রহণকৃত কয়েকটি ঠিকাদারি ফার্মের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজ কিনে নেন তিনি। কারণ তিনি নিজেই ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়িত। এ ছাড়া আরও অভিযোগ রয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি কিংবা ছুটি ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন। বেশিরভাগ সময় ঢাকাতেই ব্যস্ত থাকেন এমনকি গত বৃহস্পতিবারও অফিস না করেই ঢাকায় অবস্থান করেন তিনি। 

এদিকে সরকারি অর্থ অপচয়ের পাঁয়তারার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। আগের নির্বাহী প্রকৌশলীরা যে অফিস ব্যবহার করে গেছেন নির্বিঘ্নে সেই অফিস কক্ষটিকেই বড় করার কথা বলে এবং মেরামতের নামে সরকারি অর্থ অপচয়ের পাঁয়তারা করছেন বলে জানিয়েছে অফিস সূত্র। শুধু তাই নয়, রোলার, পেলোডা, ট্রাক এক্সেভেটর ইত্যাদির ভাড়া বাবদ ইতোপূর্বে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা প্রদানের নিয়ম থাকলেও তিনি আসার পর থেকেই সরকারি যন্ত্রপাতি ও যানবাহন ভাড়া দিয়ে প্রাপ্ত টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দেয়ার অভিযোগও রয়েছে এই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে।

এছাড়াও ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টে নতুন মালামাল দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও স্যালভেস ম্যাটেরিয়েল (পুরাতন) ব্যবহার করে নতুন কাজ শেষ করা হয়। শেরপুর-নকলা-ফুলপুর-ময়মনসিংহ প্রকল্পের শেরপুর (কলেজ মোড়) থেকে নিউমার্কেট থানার মোড় পর্যন্ত জায়গাটি অতি গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও এখানে ব্যবহার করা হয়েছে পুরাতন মালামাল। যার মূলহোতা উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম। জানতে চাইলে গতকাল শনিবার রাতে আমার সংবাদকে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেই। এগুলো ভুয়া কথাবার্তা।  

পছন্দের ঠিকাদারদের কাজের রেট জানিয়ে দেয়া, ঠিকাদারদের কাছ থেকে টাকা দাবি ও আদায়সহ একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে শেরপুরে বদলি করার পর এখন ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজ কিনে নেয়া, ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়িত থাকার বিষয়ে গতকাল রাতে মুঠোফোনের মাধ্যমে জানতে চাইলে শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম আমার সংবাদকে বলেন, এগুলো একদম উদ্ভট এবং টোটালি রং। শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের রোলার, পেলোডা, ট্রাক এক্সেভেটর ইত্যাদির ভাড়া বাবদ আয়কৃত অর্থ নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার কথা থাকলেও আপনি যোগদানের পর থেকে দিচ্ছেন না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এই অভিযোগটিও ভুল।