হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে জিকুর দখলদারিত্ব, আতঙ্কে চাষিরা

ফুয়াদ মোহাম্মদ সবুজ, মহেশখালী প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩, ০৩:৫৮ পিএম
  • ইকোনমিক জোনে দখলদারিত্বের নেতৃত্বে জিকু বিশ্বাস
  • মাছের ঘের করতে সাবেক জলদস্যুদের কাছে বর্গা দিয়েছেন সরকারি জমি
  • জিকুর অত্যাচারে দিশেহারা প্রান্তিক চাষিরা। প্রায়ই অসহায়দের মামলা-হামলার হুমকি দেয় জিকু

মহেশখালীর ধলঘাটায় ইকোনমিক জোন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত সরকারি জমি বর্গা প্রক্রিয়ায় স্থানিয় কয়েকজন সাবেক জলদস্যুকে ঘের করতে দিয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টি.কে গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসপিসিএল এর এডমিন অফিসার জিকু বিশ্বাস। ফলে চাকরির পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ কালো অর্থের মালিক বনে যাচ্ছেন এ কর্মকর্তা। 

শুধু তা নয়- প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে কম মূল্য জমি ক্রয় করে সে জমি নিজের কর্মস্থল টিকে গ্রুপে বেশি মূল্য ক্রয় করার অভিযোগও উঠেছে। এতে করে স্থানীয়রা জমির ন্যয্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ অনেকের। 

পন্ডিত ডেইল এলাকার স্থানিয় আনিছ উল্লাহ ও রবিউল হোসেন রুবেল জানান, দখলদারিত্ব, লবণ চাষিদের সাথে শত্রুতামূলক আচরণ, ভূমি বাণিজ্যসহ পুরো ইকোনমিক জোন প্রকল্প ঘিরে চলছে জিকু বিশ্বাসের নেতৃত্ব। জিকুর করা অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে স্থানিয়দের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যে মামলা-হামলা ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে মারধরসহ নানা হয়রানি করেন জিকু। 

এমতাবস্থায় প্রতিকার চেয়ে গণমাধ্যমে অভিযোগ পাঠাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত ও হয়রানির শিকার হওয়া স্থানিয় এবং প্রান্তিক লবণ চাষিরা। মহেশখালীর এ ইকোনোমিক জোনে ৫১০ একর জমির অনুমোদন দেয়া হলেও জিকুর নেতৃত্বে অনেক বেশি জমি দখল নেয় টিকে গ্রুপ। 

এদিকে- অপরিকল্পিত ড্রেজিং ও নদীভরাট করে জেটি নির্মাণ এবং উপকুলীয় বনাঞ্চল বিনাশ করে পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডে চালাচ্ছে তারা। জিকু নামের এক যুবকের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন দ্বীপটির কয়েকশো বাসিন্দাকে বলপূর্বক উচ্ছেদের অভিযোগ উঠেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানী টি.কে গ্রুপের বিরুদ্ধে। নিয়ম অনুযায়ী, প্রকল্পের সরকারি জমি প্রকল্প চলমান অবস্থায় পড়ে থাকতে পারবে কিন্তু অর্থের বিনিময়ে কাউকে বর্গা বা লিজে দেওয়া যাবেনা। অথচ বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে জিকু বিশ্বাস নিতান্তই লবন চাষীদের বঞ্চিত করে একটি সন্ত্রাসী সিন্ডিকেটকে ঠিকই বর্গা দিয়েছেন চিংড়ি ঘের করার জন্য।

সম্প্রতি ধলঘাটার ক্ষতিগ্রস্ত জমি মালিক, শ্রমিক ও লবণ চাষিরা জিকুর অনিয়মের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করলে কৌশলে মানববন্ধনটি ঠেকিয়ে দেয় অভিযুক্ত জিকু বিশ্বাস। পরে সে খবর স্থানিয় সাংবাদিকদের কাছে গেলে উপার্জিত কালো অর্থ দিয়ে গনমাধ্যমকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন জিকু। 

এ ছাড়াও বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রভাব খাটিয়ে দ্বীপবাসীকে জিম্মী করে প্রথমে নিজের নামে-বেনামে, পড়ে সেই জমিই টিকে গ্রুপের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছেন জিকু। এসব অভিযোগ নিয়ে জিকু বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি সব দোষের কথা অস্বীকার করে উল্টো দায় চাপালেন প্রান্তিক চাষীদের ওপর।  

কেএস