ধর্ষণের পর ২ বোনকে হত্যা: যুবকের মৃত্যুদণ্ড

রংপুর ব্যুরো   প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩, ০৫:৩৯ পিএম

রংপুর নগরীর মধ্য গণেশপুর এলাকায় ২ বোনকে হত্যার দায়ে মাহফুজার রহমান রিফাত (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। সেইসাথে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

ওই মামলায় অপর আসামি রিফাতের সহযোগী আরিফুল ইসলাম আরিফের (৭) সাত বছরের কারাদন্ড দেন আদালত। 

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সোয়া ১২টার দিকে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোস্তফা কামাল এ রায় ঘোষণা দেন। দন্ডপ্রাপ্ত রিফাত নগরীর বাবুখা মধ্যপাড়ার এমদাদুল হকের ছেলে এবং আরিফ রংপুর সদর উপজেলার শাহাবাজপুর কলার খামার এলাকার মহুবুল ইসলামের ছেলে। এসময় আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়িতে কেউ না থাকার কারণে মধ্যগণেশপুর এলাকার মমিনুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার মীম তার চাচাতো বোন জান্নাতুল মাওয়াকে নিজের কাছে থাকার জন্য নিয়ে আসেন। প্রেমের সম্পর্ক থাকায় ওই রাতে সুমাইয়া আক্তার মীমের বাড়িতে যান রিফাত। 

এ সময় মীমের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয় রিফাতের। পরে কথা কাটাকাটির জেরে তাকে হত্যা করেন রিফাত। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ঘরের সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজান তিনি। মীমের চাচাত বোন জান্নাতুল মাওয়া ঘটনা টের পেলে তাকেও শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ মেঝেতে ফেলে পালিয়ে যান ঘাতক রিফাত। 

এ ঘটনায় ১৮ সেপ্টেম্বর ঘটনাস্থল থেকে দুই বোনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন কোতোয়ালি থানায় মীমের বাবা মমিনুল ইসলাম মামলা করেন। ২০ সেপ্টেম্বর রিফাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রিফাত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করেন।

মামলার তদন্ত শেষে রিফাত ও আরিফের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মজনু মিয়া ও আল-আমিন। ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার আদালতের বিচারক এ রায় ঘোষণা দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট খন্দকার রফিক হাসনাইন বলেন, মামলার আসামি মাহফুজার রহমান রিফাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড এবং মামলার আরেক আসামি আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ মামলার আলামত নিজ দখলে রেখে ও প্রধান আসামিকে আলামত গোপনে সহযোগিতার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। এছাড়াও আরিফের ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেন।

আরএস