অটোরিকশা চালক সাইফুল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন, আটক ১০

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৩, ০৯:১৩ পিএম

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল থানার ইজিবাইক চালক সাইফুল ইসলাম (১৫) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ১৬ মার্চ (বৃহস্পতিবার) জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, চলতি বছরের ৪ মার্চ রাণীশংকৈল থানার রামরাই দীঘি নামক স্থানে একটি ভুট্টা ক্ষেতে প্লাস্টিকের চিকন সুতলি দিয়ে হাত পা অবস্থায় অজ্ঞাত একটি অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে একটি ক্লু-লেস মামলা রজু হয় রানীশংকৈল থানায়। পুলিশ জানতে পারে মরদেহটি ইজিবাইক চালক মো: সাইফুল ইসলামের । মামলার ছাঁয়া তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় গোয়েন্দা বিভাগকে। গোয়েন্দা বিভাগ, রানীশংকৈল থানা পুলিশ ও হরিপুর থানা পুলিশের যৌথ অভিযান পরিচালনা করে তদন্ত শুরু হয়।

এর আগে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি হরিপুর থানায় ইজিবাইক চুরির একটি মামলায় পুলিশ জানতে পারে যে, হরিপুর থানার ধীরগঞ্জ বাজার এলাকায় রাকিব (১৫) নামে এক ইজিবাইক চালককে প্লাস্টিকের চিকন সুতলি দিয়ে হাত পা বেঁধে মুখে রুমাল দিয়ে রাস্তার পাশের ভুট্টা ক্ষেতে ফেলে ইজি বাইক নিয়ে চলে যায় চোরেরা। পরে রাকিবের বাবার কাছে ফোন দিয়ে ইজিবাইক ফেরত দেওয়ার নাম করে হিমু নামে এক ব্যক্তি ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। রাকিবের পিতা ওই চক্রটিকে ১৫ হাজার টাকা দিলেও রাকিবের সন্ধান পেলেও ইজিবাইকটি ফেরত পাওয়া পায়নি।

পুলিশ তদন্তে দেখতে পায়, রাণীশংকৈলের ইজিবাইক চালক মো: সাইফুল ও হরিপুরের ইজিবাইক চালক রাকিবকে একই ভাবে প্লাস্টিকের চিকন সুতলি দিয়ে হাত পা বেঁধে ভ্ট্টুা ক্ষেতে ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে উভয় ঘটনা একই চক্রের কাজ ধারনা থেকে রাকিবের পিতার নিকট চাঁদা দাবিকারী হিমুকে আটক করা হয়। এর পর থেকেই বেরিয়ে আসে সাইফুল হত্যা ও রাকিবের অটো চুরির ঘটনায় জড়িতদের নাম । পরে গ্রেফতারকৃত ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদে উভয় ঘটনায় তারা জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মো: মেহেদী হাসান (১৮), মো: আব্দুল কাদের (৩০), মো: সাদেকুল ইসলাম ওরফে মোজাম্মেল হক মজু (২৪), মো: সজল (২৪), মো: মহিরুল ইসলাম (৪০), মো: মাহবুবু হোসেন (২০), মো: নুর আলম ওরফে মংলা (১৯), মো: মামুন ওরফে বোবা (১৮), মো: সোহেল রানা (১৮) ও মো: ইমরুল কায়েস ওরফে ইমু (২৬)।

বৃহস্পতিবার গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরন করা হয়।

এসময় ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক নিরস্ত্র (ডিআইও-১) ডিএসবি মো: আব্দুল মতিন প্রধান, হরিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: তাজুল ইসলাম।

উল্লেখ্য যে, শনিবার (৪ মার্চ) দুপুরে রানীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁও ইউনিয়নের রামরায় দিঘির পাশে ভুট্টা ক্ষেত থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ওই অটোরিকশা চালক কিশোরের অর্ধ-গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ওই কিশোর হরিপুর উপজেলার ডাঙ্গিপাড়া ইউনিয়নের দামোল পাড়া গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে।

এআরএস