ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চিকিৎসাসেবা, পলেস্তার খসে ঘটছে দুর্ঘটনা

রাজয় রাব্বি, অভয়নগর (যশোর) প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৩, ০৮:৩২ পিএম

যশোরের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঝুকিপূর্ণ ভবনে চলছে চিকিৎসাসেবা। ভবনের ছাদের বিভিন্ন স্থানের পলেস্তারা খসে পড়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। ফেটে গেছে মূল ভবনের দেয়াল ও পিলার। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যেই চলছে চার উপজেলার  মানুষের চিকিৎসা সেবা।

সূত্র জানায়, রোগী অসুস্থতা সারাতে হাসপাতালে এসে প্রতিমূহুর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে চিকিৎসা নিতে হয়। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে গাদাগাদি করে কোন রকমে চলছে চিকিৎসা সেবা। পুরাতন ভবনের সিলিং খসে পড়লেও নেই কারো কোন মাথাব্যাথা। এমতাবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে রোগীরা দিন কাটাচ্ছে চরম আতঙ্কে। ঝড় বাতাস শুরু হলে রোগীদের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ে। তখন বেড পরির্বতন করে অন্য বেডে রাখা হয় রোগীদের। দ্রুত ভবনটি সংস্কার করার দাবি রোগী ও চিকিৎসকদের।

সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, প্রবেশদ্বারের সিলিং এ বড় ধরণের ফাটল, ইতোমধ্যে ভেঙে পড়েছে বড় একটি অংশ। দ্বিতীয় তলার সিড়ি সংলগ্ন, পুরুষ, মহিলা ওয়ার্ড ও স্টাফ রুমের সিলিং প্রতিদিন খসে খসে পড়ছে। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ নারী ও শিশু ওয়ার্ডের সিলিং এর অবস্থা।

উপরে ভাঙাচোরা ছাদ নিচে নারী শিশুদেরকে রেখে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে গাদাগাদি করে কোন রকমে চলছে চিকিৎসাসেবা। ছাদের একাধিক স্থানে পলেস্তারা খসে রড বেরিয়ে পড়েছে। পুরাতন ভবনের সিলিং খসে খসে পড়লেও নেই কারো কোন মাথাব্যাথা। যদিও কর্তৃপক্ষ সতর্কতা অবলম্বনে কয়েকটি সিট খালি রেখেছেন।

মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি উপজেলার আমডাঙ্গা গ্রামের রাশিদা বেগম জানান, সেদিন রাতে মাথার উপরে সিলিং খসে পড়েছে ফলে গুরুতর আহত হয়েছি।

পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি তালতলা এলাকার আয়নাল জমাদ্দার জানান, দুপুরে ভাত খাওয়ার সময় হঠাৎ উপর থেকে বড় একটি ভাঙা টুকরা প্লেটের উপর খসে পড়েছে। অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি।

সাগর নামে একজন রোগী জানান, হাসপাতালে বেড না পেয়ে গত দুইদিন ধরে ফ্লোরে রয়েছি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স জানান, স্টাফ রুমের সিলিং ভেঙে আমি নিজে সেদিন আহত হয়েছি। এভাবে চলতে থাকলে যেকোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। ৫০ বেডে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় ৫০ বেডের এই হাসপাতালের বেড বাড়ানোর জোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

 

এ ব্যাপারে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আলিমুর রাজিব বলেন, আমাদের এ হাসপাতালে সবসময় ১শ’ এর কাছাকাছি রোগী ভর্তি থাকে, ফলে সবাইকে সব সময় সিট দেওয়া সম্ভব হয়না। ভবনের বেহাল দশা রয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে কোন মতে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

হাসপাতালের বেহাল দশার বিষয়ে জানতে চাইলে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, রোগী, চিকিৎসক ও সেবিকাদের নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় থাকতে হয়। পুরাতন ভবনের বেহাল দশার বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছি। সু-দৃষ্টি দিলে সব সমস্যার সমাধান হবে।

এআরএস