নান্দাইলে ইজিপিপির ১৩ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত

মো. শাহজাহান ফকির, নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৩, ০৪:১৮ পিএম

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারের মহানিত্ব কর্মসৃজন প্রকল্পের ১৩ কোটি ৩৬ লাখ ৪৬ হাজার ২১২ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত গেছে।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে সমন্বয় না হওয়ায় শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ এই বিপুল পরিমাণ অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত পাঠায় প্রশাসন। সরকারি এই অর্থ ফেরত যাওয়া সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এটা জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের ব্যর্থতা বলে দাবী করছেন তাঁরা।

নান্দাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২১-২০২২ ও ২০২২-২০২৩ এই দুই অর্থ বছরে ৪ দফায় নান্দাইল উপজেলায় ১৩ কোটি ৩৬ লাখ ৪৬ হাজার ২১২ টাকা সরকারি বরাদ্দ ছিল। প্রতি দফায় ১ হাজার ৯৯৭ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৪০ দিনের কর্মসূচী অনুযায়ী জনপ্রতি মোট ১৬ হাজার ৭৩০ টাকা করে মোট ৩ কোটি ৩৪ লাখ ১১ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এতে করে প্রতি শ্রমিকের দৈনিক মুজুরী পড়ে ৪১৮ টাকা ২৭ পয়সা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নারী ও পুরুষ শ্রমিক জানান, আগে তো এই সময়ে চল্লিশার কাজ পাইতাম। ফলে যে কয়টা টাকা পাইতাম তা দিয়ে কিছুটা দু:খ দূর হইতো। এখন দুই বছর ধরে চল্লিশার কোন কাজই পাই না। এই কাজটা পাইলে ভালো অইতো।

এ বিষয়ে উপজেলার ৮নং সিংরইল ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রকল্প অফিসে শ্রমিকদের তালিকা দিয়েছি। কেন কাজ পায়নি। তা বলতে পারছিনা। তবে ওইসময় ৪০০ টাকায় শ্রমিক কাজ করতে চায় না।

৪নং চন্ডিপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিন ভূইয়া বলেন, কেন কাজ হয়নি। তা সবাই জানে। আমি এর ব্যাখ্যা করতে চাইনা। তবে আমি শ্রমিকদের তালিকা অফিসে জমা দিয়েছিলাম।

১১নং খারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসনাত মিন্টু বলেন, এসময় শ্রম বাজারে শ্রমিকদের মূল্য অনেক। ৪০০ টাকায় শ্রমিক পাওয়া যায় না। শ্রমিকরা বলে চুক্তিভিত্তিক ভেকু দিয়ে মাটি খাটাইয়ালান।

নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম শাহান বলেন, নান্দাইলের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ সরকারি অর্থ কোষাগারে ফেরত যাওয়ার বিষয়টি নান্দাইলবাসীর জন্য অতীব দু:খজনক। সম্ভবত একটি স্বার্থনেষী মহল তাদের স্বার্থ হাসিল করতে না পারায় উক্ত টাকা ফেরত গেছে। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।

এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আহসান উল্লাহ সরকারি এই বরাদ্দ ফেরত পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যথাসময়ে শ্রমিকদের তালিকা না পাওয়ায় কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ হয়নি। ফলে বরাদ্দকৃত অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত যায়। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবুল মনসুরের সাথে সেলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁর কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এআরএস