ইউপি সচিব বোন, অফিস করেন ভাই

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২৩, ০৭:০১ পিএম

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিব সুরভী দত্ত। অথচ, তার বদলে প্রায় পাঁচ বছর ধরে অফিস করছেন তার বড় ভাই মানস রঞ্জন দত্ত (স্বপন দত্ত)। বোনের বদলে নিয়মিত অফিস করেন তিনি। জাতীয় দিবস, বিভিন্ন সভা ও ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা পরিষদ পরিদর্শনে এলে সেদিন অফিসে আসেন সুরভী দত্ত। বোনের হয়ে বিভিন্ন সনদ ও পরিষদের কাগজপত্রে স্বাক্ষরও করেন ভাই মানস রঞ্জন দত্ত (স্বপন দত্ত)।

সরেজমিনে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর ধরে গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের দায়িত্বে আছেন সুরভী দত্ত। প্রথমদিকে তিনি নিয়মিত অফিস করলেও বর্তমানে তিনি নিয়মিত অফিসে আসেন না। জাতীয় দিবস, বিভিন্ন সভা ও ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা পরিষদ পরিদর্শনে এলে সেদিন অফিসে আসেন সুরভী দত্ত। অথচ, তার ভাই মানস রঞ্জন দত্ত (স্বপন দত্ত) সচিব হিসেবে নিয়মিত অফিস করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইউপি সদস্য বলেন, জাতীয় দিবস, বিভিন্ন সভা ও ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা পরিষদ পরিদর্শনে এলে সেদিন অফিসে আসেন সুরভী দত্ত। তার হয়ে নিয়মিত অফিস করেন তার ভাই মানস রঞ্জন দত্ত ওরফে স্বপন দত্ত। পরিষদের কাগজপত্রে বোনের হয়ে স্বাক্ষরও করেন স্বপন দত্ত।

আরেক ইউপি সদস্য বলেন, পরিষদের কম গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেন স্বপন দত্ত। আর বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাগজে সুরভী দত্ত স্বাক্ষর করেন। অনেক সময় বাড়িতে গিয়ে সুরভী দত্তের স্বাক্ষর নিয়ে আসতে হয়।

গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা পংকজ কুমার শীল বলেন, সুরভী দত্ত মাঝে মাঝে আসেন। যখন তিনি থাকেন না তখন তার কোন স্বাক্ষরের প্রয়োজন হলে কাগজ রেখে দেওয়া হয়, উনি এসে পরে স্বাক্ষর করেন। মাঝে মাঝে সুরভী দত্তের বাড়িতে গিয়ে তার স্বাক্ষর নিতে হয়।

এ ব্যাপারে গোপীনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন মোল্লা বলেন, দেড় বছর ধরে আমি চেয়ারম্যান। এই বিষয়ে কেউ কোন কথা আমাকে বলেনি। আপনারা বললেন, বিষয়টি দ্রুতই ঠিক হবে।

এ ব্যাপারে সুরভী দত্তের সাথে কথা বলতে তার বাড়িতে গেলে জানানো হয়, তিনি ঢাকায় গেছেন। তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

তবে, মানস রঞ্জন দত্ত (স্বপন দত্ত) বোনের চাকরি করার বিষয়ে বলেন, বিষয়টি দ্রুতই ঠিক হয়ে যাবে। স্বাক্ষর করার বিষয়ে তিনি বলেন, পরিষদের আর্থিক কোন কাগজপত্রে আমি স্বাক্ষর করি না।

হরিরামপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাপসী রাবেয়া বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মানিকগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক শাহিনা পারভীন বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এআরএস