হোসেনপুরে কাঁচা রাস্তায় ১০ গ্রামে ভোগান্তি

হোসেনপুর ( কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩, ০৪:২৭ পিএম

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের বেশিরভাগ রাস্তা-ঘাটে কমবেশি উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও কুড়িমারা গ্রামের ভিতর দিয়ে উপজেলা ও জেলা সদরে সংযোগকারী গ্রামীণ ৮টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এখনো যেন বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

ফলে উপজেলার উত্তর কুড়িমারা ও দক্ষিণ কুড়িমারা গ্রামের ভিতর দিয়ে যাতায়াতকারী এসব কাঁচা রাস্তা দীর্ঘদিনেও পাকাকরণ না হওয়ায় বর্তমানে যানবাহন ও পথচারী চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হবে এসব দেখার যেন কেউ নেই। তাই ভুক্তভোগীরা কর্দমাক্ত ওইসব গ্রামীণ রাস্তা পাকাকরণে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করে জরুরি প্রতিকার দাবি করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের কুড়িমারা গ্রামের ভিতর দিয়ে চলাচলের ৮ গ্রামীণ রাস্তার মধ্যে প্রায় ৬ কিলোমিটারই কর্দমাক্ত। রাস্তাগুলো দীর্ঘদিনেও পাকাকরণ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন উপজেলার আশুতিয়া, গলাচিপা, ঠাডারকান্দা, কুড়িমারা, বাসুরচর,কাউনা ও বিশ্বনাথপুর, ধনকুড়াসহ আশপাশের ১০ গ্রামের মানুষ। কাদায় বেহাল এসব গ্রামীণ রাস্তাগুলো হলো- উপজেলার উত্তর কুড়িমারা গ্রামের আব্দুল মান্নান বিএসসির বাড়ি থেকে মাছিম মুন্সীর বাড়ি পর্যন্ত এক কিমি, মনো মিয়ার বাড়ি থেকে খোকা মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত ৫০০মিটার, মুক্তিযোদ্ধা ছাত্তার মিয়ার বাড়ি থেকে মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের বাড়ি পর্যন্ত এক কিমি, মুক্তিযোদ্ধা নুর ইসলামের বাড়ি থেকে ফজলুর রহমানের বাড়ি পর্যন্ত এক কিমি, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমানের বাড়ি থেকে কাঞ্চন মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত ৫০০মিটার, কোয়েদী বাড়ির মসজিদ থেকে বাচ্চু মেম্বারের বাড়ি পর্যন্তে এক কিমি, আবদুল হাইয়ের বাড়ি থেকে কাদিরের বাড়ি পর্যন্ত ৫০০মিটার, কাদিরের বাড়ির মসজিদ থেকে সাবেক মেম্বার রুবেলের বাড়ি পর্যন্ত ৫০০ মিটার রাস্তা।

সরেজমিনে শাহেদল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রুবেল মিয়া, স্থানীয় বাসিন্দা  মো. আব্দুল হাই, মো. আজহারুল ইসলাম, মো. জসিম উদ্দিন, মো. মজিবুর রহমান, মো. রতন মিয়াসহ ভুক্তভোগী অনেকেই জানান, গ্রামীণ জনপদে চলাচলের জন্য উত্তর কুড়িমারা গ্রামের কাঁচা ওই ৮ রাস্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া পুলেরঘাট বাজার থেকে হোসেনপুর রাস্তা এবং ঐতিহ্যবাহী আমতলা থেকে কাউনা বাজারগামী ইলিম পরদানীর বাড়ির পাশ দিয়ে চলাচলকারী আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে ওই রাস্তাগুলো। ওইসব রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন পাশের আরো ১০ গ্রামের লোকজন উত্তর এবং দক্ষিণ কুড়িমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইসলামী ফাউন্ডেশন মাদ্রাসা, আঞ্চলিক পোস্ট অফিস ও স্থানীয় চারটি মসজিদসহ বিভিন্ন স্থানে ভোগান্তি নিয়ে যেতে হচ্ছে পথচারীদের। 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, উপজেলার উত্তর কুড়িমারা গ্রামের ওই ৮ রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা সংশ্লিষ্ট কেউই কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই ওইসব রাস্তায় মারাত্বক কাদার সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচলে অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। এমনকি খালি পায়ে হেঁটে চলাচল করাও কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এতে আশপাশের ১০ গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুম এলেই এ ভোগান্তি যেন আরো বেড়ে যায় কয়েক গুণ।

স্থানীয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, ওইসব কর্দমাক্ত রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পা পিছলে অনেক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। কেউ অসুস্থ হলে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নেওয়ার ক্ষেত্রেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগীদেরকে।

এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের জেলা পরিষদের সদস্য মো. মাসুদ আলম ও স্থানীয় শাহেদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফিরোজ উদ্দিন জানান, উত্তর কুড়িমারা গ্রামের ভিতর দিয়ে চলাচলকারী গ্রামীণ ওই ৮ রাস্তা দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। তাই জনগুরুত্বপূর্ণ ওইসব রাস্তা সংস্কার ও পাকাকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আশা করছি স্থানীয় এলজিইডি অফিস থেকে খুব শীঘ্রই রাস্তাগুলোর সার্ভে কার্যক্রম সম্পন্ন করে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

এআরএস