ফুলপুরে অপরিকল্পিত ফিসারীজে দুর্ভোগ

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৩, ১২:৩৩ পিএম

ময়মনসিংহের ফুলপুরে অপরিকল্পিত ফিসারীজ নির্মাণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজারো মানুষ। উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে একই অবস্থা।

নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে ৫ থেকে ১০ ফুট গভীর মাটি কেটে ২/৩ ফসলি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে গড়ে উঠেছে শতশত ফিসারীজ। পানি প্রবাহের স্বাভাবিক গতিপথ বন্ধ করে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা ওইসব ফিসারীজগুলোর কারণে প্রতি বছরই সৃষ্টি হচ্ছে চরম জলাবদ্ধতা।

বিশেষ করে বর্ষার মৌসুমে স্থানীয় জনজীবনে নেমে আসে অকল্পনীয় দুর্ভোগ। এসময় মানুষজনকে খুবই মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। বর্তমানে উপজেলার স্থানীয় বিলগুলোতে জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ হচ্ছে অপরিকল্পিত ফিসারীজ নির্মাণ। পানি প্রবাহের সঠিক ব্যবস্থাপনা না রেখেই বেশীর ভাগ ফিসারীজ তৈরী করা হয়েছে। যার ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই ফিসারীজ সংলগ্ন এলাকা প্লাবিত হয় এবং তলিয়ে যায় ফসলের ক্ষেতসহ আশপাশের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট।

স্থানীয় রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে মানুষজন ও যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীগণ ভয়াবহ অসুবিধার সম্মুখীন হয়। এসময় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য স্থানীয় হাট-বাজারে যাওয়াটাও অসম্ভব হয়ে পড়ে।

প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে ফুলপুর পৌরসভার আমুয়াকান্দা গ্রামের ভুইদ্দা বুড়ি ও কুন্দা বুড়ি বিলের জলাবদ্ধতার চিত্র জনদুর্ভোগের এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। অথচ একসময় ওইসব বিলের জমিগুলো ছিল তিন ফসলি। প্রতিবছরই উৎপাদিত হতো হাজার হাজার মণ ধান। কিন্তুু জলাবদ্ধতার কারণে এখন তা আর সম্ভব হচ্ছেনা। বর্তমানে বিলগুলোতে কিছু জমি এক ফসলি ও বেশীর ভাগ জমিতে ফিসারীজ নির্মাণ এবং বাকী জমিগুলোতে সারা বছরই জলাবদ্ধতা লেগে থাকে।

আবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়, সরকারি রাস্তার ধারে গড়ে ওঠা ফিসারীজের মালিকরা পুকুরের পাড় হিসেবে রাস্তাকেই ব্যবহার করছেন। এ কারণে স্বল্প সময়েই রাস্তাগুলোতেও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। অনেক জায়গায় নতুন ফিসারীজ তৈরী করে চারদিকে নেট বা তারের বেড়া দিয়ে মানুষ চলাচলের দীর্ঘদিনের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল বলেন, দেশে মাছের চাহিদা মেটাতে ফিসারীজের অবশ্যই প্রয়োজন আছে। তবে পানি প্রবাহের নির্দিষ্ট পথ রেখে পরিকল্পিতভাবে ফিসারীজ নির্মাণ করতে হবে। মানুষজনের ভোগান্তি সৃৃষ্টি করে কোনো কিছু করা যাবেনা

ফুলপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা (অ.দা) গোলাম মোস্তফা জানান, একথা সত্য যে, বর্তমানে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা ফিসারীজগুলো জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনস্বার্থ বিবেচনা করে ফিসারীজ নির্মাণে মাছ চাষীদের সচেতন হতে হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাজ্জাদুল হাসান জানান, ফিসারীজ মালিকদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

এআরএস