সুপারের শ্বশুর সভাপতি, স্ত্রী নিরাপত্তাকর্মী, শ্যালিকা আয়া

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৩, ০৮:৫৯ পিএম

মাদ্রাসার তথ্য জানতে চাইলেই ক্ষেপে গেলেন সুপার
 

  • সুপারের শ্বশুর সভাপতি, স্ত্রী নিরাপত্তাকর্মী, শ্যালিকা আয়া 
  • স্ত্রী ও শ্যালিকার বিপরীতে খাটে অন্যজন
  • মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতার স্ত্রী সভাপতি, আরেক জামাতা অধ্যক্ষ্য 
  • প্রতিষ্ঠার ৫ যুগ পেরোলেও জরাজীর্ণ মাদ্রাসা, নেই সাইনবোর্ড

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের দেউলডাংরা নুরুল উলুম দাখিল মাদ্রাসায়সুপার এনামুল হকের শ্বশুর কাজী নুরুল ইসলাম মাদ্রাসাটির সভাপতি, স্ত্রী শামছুন্নাহার নিরাপত্তাকর্মী ও শ্যালিকা ছদরুন্নাহার আয়া পদে চাকুরী করছেন।

তবে নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে চাকুরী পেলেও তারা নিয়মিত কাজ করেন না। টাকার বিনিময়ে অন্যজনকে দিয়ে দায়িত্বপালন করাচ্ছেন। এমপিওভ‚ক্ত প্রতিষ্ঠানের এরকম অনিয়মতান্ত্রিক বিষয়টি নিয়ে এলাকা সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

বুধবার (৮ নভেম্বর) সরেজমিনে অত্র মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে অনিয়ম ও মাদ্রাসার বিষয়ে জানতে চাইলেমিডিয়াকর্মীদের প্রতি ক্ষেপে যান মাদ্রাসার সুপার এনামুল হক। কোন অবস্থাতেই তিনি মাদ্রাসার তথ্য দিতে রাজি নন। 

স্থানীয় ও একাধিক সূত্রে জানাগেছে, ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত নুরুল উলুম দাখিল মাদ্রাসাটি ১৯৮৭ সালে এমপিওভুক্ত হয়। প্রায় পাঁচ যুগ পেরিয়ে গেলেও মাদ্রাসাটির প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো জরাজীর্ণ অবস্থা পড়ে রয়েছে। নেই কোন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড। শিক্ষার মান উন্নয়নেরও বেহাল অবস্থা। মাদ্রাসার সুপারের বাড়ির আঙ্গিনায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এ যেন পুতুল খেলার ঘর। বর্তমানে এমপিওভুক্ত মাদ্রাসাটির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি তাঁর শ্বশুর কাজী নুরুল ইসলাম। পাঁচ মাস আগে মাদ্রাসায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে অধ্যক্ষের স্ত্রী শামছুন্নাহার ও আয়া হিসেবে শ্যালিকা ছদরুন্নাহার নিয়োগ পেয়েছেন।

অভিযোগ উঠেছে, নিয়োগ পেলেও তাঁরা কাজ করেন না। অন্য লোক দিয়ে কাজ করানো হয়। সে জন্য তাঁকে ভাতাও দেওয়া হয়।বর্তমানে মাদ্রাসাটিতে ৩৫০ জনের মতো শিক্ষার্থী এবং ১৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। কাজী নুরুল ইসলাম পাশাশাশি দেউলডাংরা মহিলা দাখিল মাদ্রাসারও প্রতিষ্ঠাতা। সেখানে তাঁর স্ত্রী সভাপতি, আরেক জামাতা মো. শহীদুল্লাহ্ অধ্যক্ষ।৩৫০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও অর্ধেকের কম শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত পাওয়া গেছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের নিয়োগকৃত নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া থাকার পরও লাকী আক্তার নামের এক নারী কাজ করেন। মাদ্রাসার তহবিল থেকে তাঁকে বেতন দিচ্ছেন অধ্যক্ষ। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মো. এনামুল হক বলেন, ‘নিয়োগের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আমার শ্বশুর নিজে দুটি প্রতিষ্ঠান করেছেন। এখানে উনার মেয়েদের চাকরি দিয়েছেন।’জানতে চাইলে নান্দাইল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, ‘নিয়োগের সময় এ ব্যাপারে আমার আপত্তি ছিল। কীভাবে নিয়োগ হলো জানি না।’

আয়া থাকা সত্ত্বেও অন্য লোক দিয়ে কাজ করানো যাবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা কখনো সম্ভব না। যিনি নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁরই কাজ করতে হবে। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।’

আরএস