উখিয়ায় নারীদের বৈষম্যের অবসান ঘটাতে স্কাসের সভা

উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩, ১১:০৯ এএম

কক্সবাজারের উখিয়ায় ১৬ দিনব্যাপি আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ কর্মসূচি উপলক্ষে এনজিও সংস্থা স্কাসের উদ্যোগে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বিকালে উখিয়া উপজেলা পরিষদ হলরুমে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা’ (স্কাস) কর্তৃক আয়োজিত সমন্বয় সভার মূল বিষয় ছিলো যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্য ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বিষয়ক রেফারেল ও রিপোর্টিং ব্যবস্থা উপজেলা পর্যায়ে প্রতিষ্ঠা, শক্তিশালী ও কার্যকর করা।

স্কাসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান কামরুন্নেসা বেবী।

[270663]

স্কাস’র প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর তাজনিন আক্তারের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল মামুন হোসেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাবিবা জাহান, উখিয়া প্রেস ক্লাব সভাপতি সাঈদ মুহাম্মদ আনোয়ার, উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) শিক্ষা কর্মকর্তা মোক্তার আহমদ, প্লান ইন্টারন্যাশনালের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মাহবুবুল আলম। লীপ প্রকল্পের চলমান কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন স্কাসের প্রজেক্ট কো অর্ডিনেটর তারিকুল ইসলাম।

সমন্বয় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন, উখিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রতন কান্তি দে,  সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ, অনলাইন প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিক আজাদ, ইউএনডিপি উপজেলা সম্বনয়ক সেলিম উদ্দিন, উখিয়া প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক শফিউল শাহীন, উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক এইচ.কে রফিক উদ্দিন।

[270668]

এছাড়াও এনজিও প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ,ইউএনডিপি, একশনএইড, ব্লাস্ট,পালস, হাসি মখু ফাউন্ডেশন, মুক্তি কক্সবাজারের প্রতিনিধি সহ স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা, লিঙ্গভিক্তিক সহিংসতার শিকার নারী ও কিশোরীদের যথাযত সেবা নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা পর্যায়ে রেফারেল ও রিপোর্টিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, শক্তিশালী ও কার্যকর করা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন। একই সাথে যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্য ও লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা বিষয়ক স্থানীয় পর্যায়ে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা ও রেফারেল ও রিপোর্টিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা বিষয়ে মুক্ত আলোচনা ও কার্য উপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

স্কাসের প্রকল্প সমন্বয়কারী তারিকুল ইসলাম জানান, নারী ও কিশোরীদের প্রতি সব ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে বিশ্বব্যাপী চলছে ১৬ দিনের আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধক কর্মসূচী। লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে ১৬ দিনের কর্মসূচী হল একটি বার্ষিক আন্তর্জাতিক প্রচারাভিযান যা ২৫ নভেম্বর শুরু হয়ে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা নির্মূলের আন্তর্জাতিক দিবসে শুরু হয় এবং তা গত ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস পর্যন্ত চলে। তারই অংশ হিসেবে ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) কর্তৃক সমন্বয় সভাটি আয়োজন করা হয়েছে।

[270660]

সভায় প্রধান অতিথি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, স্কাস যেহেতু আমার উখিয়ায় নারীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে, আমার সহযোগিতা স্কাসের জন্য সবসময় থাকবে।

সভায় স্কাসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারময়ান জেসমিন প্রেমা বলেন,আমি উখিয়াতে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করতে চাই, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছাড়া নারীর ক্ষমতায়ন হয় না। কাজেই আমি উখিয়াতে নারীদের জন্য কর্মসংস্থান করতে চাই, প্রয়োজন হলে ব্যক্তিগতভাবে করব।

উপস্থিত অংশীজনের মধ্যে লীপ প্রকল্পের কিশোরী দলের ফাতেমা আকতার বলেন, আমরা “স্কাস” চ্যাম্পিয়ন অব চেঞ্জ গ্রুপের ৮ টি অধিবেশন গ্রহণের মাধ্যমে আমার জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। মহিলাদের পিরিয়ডের সময় কী কী করণীয় এবং কী কী নয় তা সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এছাড়া শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক, যৌন নির্যাতন এবং বয়সন্ধিঃকালে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে পেরেছি।

লীপ প্রকল্পের কিশোর দলের রিদুয়ান বলেন, স্কাস আমাদের এলাকায় গ্রুপ সেশনের আয়োজন করে। এই সেশন থেকে যৌন রোগ সম্পর্কে জানতে পেরেছি এবং এইসব রোগের চিকিৎসার জন্য কোথায় যেতে হবে তা জেনেছি। জীবন রক্ষাকারী মূল্যবান সেশনের জন্য স্কাসকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যগত উন্নয়নের মাধ্যমে কক্সবাজারের (স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও রোহিঙ্গা) কিশোরী এবং নারীদের ক্ষমতায়ন ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্লান ইন্টারন্যাশনালের কারিগরি সহায়তা এবং গ্লোবাল এয়াফেয়ার্স কানাডার অর্থায়নে এনজিও স্কাস উখিয়া উপজেলায় লীপ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন।

লিঙ্গভিক্তিক সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, জীবন দক্ষতা বৃদ্ধি, যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার, মানসিক স্বাস্থ্য, পজেটিভ প্যারেন্টিং, ইত্যাদি বিষয়ে জন সচেতনতা সূষ্টি করা এই প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

এআরএস