বাবা হারানো ৩ যমজ ভাই পেলেন মেডিকেলে চান্স

বগুড়া প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪, ১০:৪৭ এএম

বগুড়ার ধুনট উপজেলার তিন জমজ ভাই এখন দেশের তিন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। এদের একজন মাফিউল ইসলাম গত বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ভর্তির সুযোগ পান শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় বাকি দুই যমজ সাফিউল হাসান ও রাফিউল ইসলাম ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন দিনাজপুরের আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে।

তারা তিনজন ধুনট নবির উদ্দিন পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন।

এই তিন ছেলের সাফল্য নিয়ে তাদের মা আরজিনা বেগম জানান, প্রাথমিকে মেধার স্বাক্ষর রাখার পর তিন ছেলেকে ভর্তি করান ধুনটের সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে তিন ভাই একসঙ্গে জিপিএ-৫ নিয়ে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণের পর থেকেই ছেলেদের নিয়ে স্বপ্ন বাড়তে থাকে তার। ২০০৯ সালে তাদের বাবা গোলাম মোস্তফা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বাবার স্নেহ মমতা কিছুই পায়নি ওরা। নিজে কষ্ট করে জমি বিক্রি করে ওদের পড়ালেখা করিয়েছেন তিনি। তাদের প্রায় ৫ বিঘা জমি ছিল। জমি বিক্রি করে ওদের পড়ালেখার খরচ চালিয়েছেন। বাকি যা আছে তাও প্রয়োজনে বিক্রি করবেন, তবুও ওদের ডাক্তার বানাবেন তিনি।

এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, গ্রামের লোকজন ওদের যখন দেখতে আসে তখন গর্বে আমার বুক ভরে যায়।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া মাফিউল হাসান বলেন, নিজে প্রথমবার চান্স পেলেও বাকি দুই ভাইয়ের ইচ্ছে পূরণ না হওয়ায় মনের মধ্যে কষ্ট থেকে যায়। এবার বাকিরা ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় নিজের মেডিকেল চান্স পাবার আন্দন পূর্ণতা পেলো।

দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে চান্সপ্রাপ্ত সাফিউল বলেন, নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রচণ্ড শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে এক চিকিৎসকের কাছে যান তিনি। চিকিৎসকের কথা এবং আচরণে তার মনে হয় অসুস্থতা অর্ধেক কমে গেছে। একজন মানুষের কথা কিংবা ব্যবহার এত সহজে মানুষকে সুস্থ করে দিতে পারে সেই ভাবনা থেকে সেদিনই বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন সাফিউল।

এদিকে নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে সুযোগ পাওয়া রাফিউল ইসলাম বলেন, প্রথমবার আমাদের এক ভাই চান্স পেয়েছিল। তখন মনে হয়েছিল আমাদের কষ্টের টাকা একটু হলেও কাজে লেগেছে।

ইএইচ