শহীদ জামালের কবরের বেহালদশা

কালিহাতী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৪, ১২:০১ পিএম

স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের এক অকুতোভয় বীর সৈনিকের নাম শহীদ জামাল হোসেন। অযত্নে অবহেলায় বেহাল দশায় পড়ে রয়েছে তার সমাধিস্থল, নেই কোনো নেইম প্লেটও। পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে কবরের দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শহীদ জামাল হোসেন টাঙ্গাইলের কালিহাতী পৌরসভার চামুরিয়া গ্রামের আব্দুল সরকার এবং ছাকিরন নেছার পুত্র। তারা দুই ভাই ও তিন বোন।

ছোটবেলা থেকেই জামাল হোসেন ছিলেন খুবই হাসিখুশি কিন্তু দুঃসাহসিক। তিনি ১৯৬৮ সালে কালিহাতীর রামগতি শ্রীগোবিন্দ (আরএস) পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭১ সালে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ২য় বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে দেশমাতৃকার টানে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। কালিহাতী হাই স্কুল মাঠে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই জামাল হোসেন ময়মনসিংহ থেকে টাঙ্গাইল এসে মুক্তিযোদ্ধাদের সুসংগঠিত করার জন্য কাজ করতেন। এছাড়া তৎকালীন সরকার বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে সাহসের সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল কালিহাতী উপজেলা সদরের পোস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় পাকিস্তানি হানাদাররা জামাল হোসেনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে শহীদ জামাল হোসেনকে তার নিজ গ্রাম চামুরিয়ায় কবর দেওয়া হয়।

শহীদ জামালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার কবরের ভেতরসহ চারপাশে জঙ্গলে ভরে গেছে। কবরের উত্তর ও পশ্চিম পাশের মাটি সরে গিয়ে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। কবরে লাগানো হয়নি নেইম-প্লেট।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী খন্দকার মোখলেছুর রহমান মনি জানান, যাদের আত্মত্যাগে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি তাদের কবর এভাবে থাকতে পারে না। এটা আমাদের অবহেলার বহিঃপ্রকাশ।

শহীদ জামাল হোসেনের ভাতিজা আব্দুল কাদের জানান, কিছুদিন পূর্বে সরকারিভাবে কবরটি পাকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, ঠিকাদার কাজটি অসম্পূর্ণ রেখেই চলে যায়। তাই যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে কবরটি। কবরে লাগানো হয়নি নেইম-প্লেট। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা দ্রুত কবরটির সংস্কার চাই।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম জানান, শহীদ জামাল হোসেনের কবরটি দ্রুত সংস্কার করা হবে।

ইএইচ