মানিকগঞ্জে যমুনায় চলছে অবৈধ ড্রেজার

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৪, ০৫:৩৪ পিএম

মানিকগঞ্জে শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নে বেড়িবাঁধকে উপেক্ষা করে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু
উত্তোলন করছে প্রভাবশালী মহল। হুমকিতে বেড়িবাধসহ এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, তেওতা ইউনিয়নে নিহালপুর হইতে জাফরগঞ্জ পর্যন্ত অবৈধ ড্রেজার মালিকরা
দিন রাত সমান ভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন ইতিপূর্বেও অভিযান করলেও বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন।

স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারীর অভাবে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজেস্ব এবং হুমকির মুখে পড়ছে বেড়িবাধসহ মানুষের বসত বাড়ি। বালু পরিবহনের জন্য অবৈধ ড্রম ট্রাক ও ট্রাক্টরের সারিবদ্ধভাবে লম্বা লাইন দেখেই মনে হয় এলাকায় বালু উত্তোলনের মহাউৎসব চলছে।

যত্রতত্র ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে রাস্তাঘাট ও বেরিবাঁধ নষ্ট করে একদিকে মানুষের চলাচলে অযোগ্য করে ফেলেছে
অন্যদিকে ধুলা-বালির কারনে মানুষের বাড়ি-ঘরে রসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অনেকেই এসব ধুলা বালির মধ্যে
চলাচল করায় নানা ধরনের শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সড়ক দিয়ে বে-পরোয়া ভাবে ড্রাম
ট্রাক ও ট্রাক্টর চলাচল করায় দুর্ঘটনারও সম্ভাবনা রয়েছে। ইউনিয়নের যমুনা নদীর পাড় ঘেষেই বেরিবাঁধ ও মানুষের
বসত বাড়ি উপেক্ষা করে প্রায় ৫ টি গ্রামের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০টি অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন
করছে। নিহালপুর গ্রামের মনির ও মুন্না দক্ষিন তেওতার শ্যাম মিয়া, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের , জালাল
উদ্দিন, বিশ্বজিৎ ও আবুল মিয়া, সাতুরিয়া গ্রামে হালিম, মুন্না ও টুকু, জাফরগঞ্জ গ্রামে নান্নু মিয়া, রাকিব (রাকা), হাবিবুর মেম্বার, ফরহাদ ও হারুন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, যমুনা নদীতে অসাধু বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় নদী থেকে
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে। নদীতে পানি প্রবাহ কমে গেলে বালু উত্তোলনের ফলে বিভিন্ন স্থানে ভাঙন সৃষ্টি
হয়। একই সঙ্গে বসতভিটাও পড়ে হুমকির মুখে। অপর দিকে ড্রেজার মেশিনের বিকট শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এ অঞ্চলের মানুষ, রাতের বেলায় ঘুমানো দুস্কর। তাদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী টু শব্দ করতে সাহস পায় না। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাইনি এলাকাবাসী।

ড্রেজার ব্যবসায়ী হালিমের সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি গনমাধ্যম কর্মীদের বলেন, নিউজ প্রকাশ করে কি হবে, তার চেয়ে ভাল আমার সাথে দেখা করে চা নাস্তা করে যান।

এ বিষয়ে তেওতা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, আমি ড্রেজার চালাই,
আপনাদের কোনো সমস্যা থাকলে বলতে পারেন। এই বলে ফোন কেটে দেন। কিছুক্ষণ পর অচেনা এক নাম্বার থেকে এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে বলেন, ড্রেজার নিয়ে কি সমস্যা আপনাদের? আমাদের প্রেসক্লাবে মাসোহারা করা আছে। আর কোনো কথা থাকলে, আমার সাথে সামনাসামনি এসে কথা বলুন।

ড্রেজার ব্যবসায়ী মুন্না বলেন, আমরা চুরি করে ড্রেজার চালাই, আপনাদের কিছু করতে হলে বলেন, আমি
চলে আসি।

এ বিষয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বেল্লাল হোসেন বলেন, অবৈধভাবে ড্রেজারের অভিযান চলমান এবং অব্যাহত আছে। ইউপি সদস্যের ড্রেজার বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, বিষয়টা আমার জানা ছিলো না তবে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

বিআরইউ