কুমিল্লায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যাকারী র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

কুমিল্লা প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ২, ২০২৪, ০৫:৪২ পিএম

কুমিল্লা সদর দক্ষিণের গলিয়ারা ইউনিয়নের সোনালী শিশু বিদ্যানিকেতনের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী তানজিম সুলতানা ঝুমুরের ধর্ষক ও হত্যাকারী মফিজুল ইসলাম মফুকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১, ক্রাইম প্রিভেনশন
কোম্পানি-২ এর একটি আভিযানিক টিম।

বুধবার সকাল ১১টায় নগরীর শাকতলায় র‌্যাব-১১ কুমিল্লা কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র‌্যাব অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা,পিপিএম, পিএসপি।

এর আগে গ্রেফতার আসামি মফুকে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করা হয়। প্রেসব্রিফিংয়ে শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন র‌্যাব অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা। এ সময় তিনি ধীরে ধীরে ঘটনার বর্ণনা দেন।

র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, ধর্ষণের পর হত্যার শিকার শিশু ঝুমুর কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা উত্তর ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামের দুবাই প্রবাসী জাকির হোসেনের একমাত্র মেয়ে। ঘটনার দিন ২৯ এপ্রিল সকালে ঝুমুর স্কুলে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু বেলা ১১টা পর্যন্ত সে বাড়ি না ফিরলে তার মা স্কুলে যান। সেখানে মেয়ের কোনও হদিস না পেয়ে ফেরার পথে ঝুমুরের সহপাঠীর কাছে জানতে পারেন সে স্কুল শেষে বাড়ি চলে গেছে। বিকালে বাড়ির অদূরে ধানক্ষেতে একটি লাশ পড়ে আছে বলে তিনি জানতে পারেন। সেখানে গিয়ে তিনি তার মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন
একই এলাকার মফিজুল ইসলাম মফুকে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা বাঁশঝাড়ের ভেতর থেকে দ্রুত রাস্তায় উঠে আসতে দেখেছেন। এ ঘটনায় মামলার খবর জানতে পেরে মফু চাঁদপুরে পালিয়ে যায়। গত ৩০ এপ্রিল রাতে তাকে চাঁদপুরের শাহরাস্তির ফেরুয়া বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার মফিজুল ইসলাম মফু কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার খিলপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। সে নিয়মিত গাঁজা সেবনকারী এবং পেশায় রাজমিস্ত্রির যোগালি।

গ্রেফতার মফিজুল ইসলাম মফু শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার এবং তার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য উল্লেখ করে র‌্যাব অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতার মফু ঝুমুরকে চিনতো। এই সুযোগে ২৯ এপ্রিল সকালে ঘটনাস্থলের পাশের রাস্তায় ওত পেতে থাকে। স্কুলের ছুটি শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে ঝুমুর ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পৌঁছালে মফু তাকে রাস্তার পাশের ধানি জমিতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ঝুমুর চিৎকার করার চেষ্টা করলে মফু তার মুখ ও গলা চেপে ধরে। এতে সে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা
যায়। কোনও নড়াচড়া দেখতে না পেয়ে ঝুমুরের কানে থাকা স্বর্ণের দুল ছিড়ে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে মফু।

র‌্যাব-১১ অধিনায়ক বলেন, র‌্যাব অপরাধ দমন ও অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। আমরা আশা করছি, কুমিল্লায় শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার আসামি দ্রুত তার শাস্তি পাবে। উক্ত বিষয়ে গ্রেফতারকৃত আসামীকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় হস্তান্তর।

আরএস