সালমান এফ রহমান এমপির সার্বিক সহায়তা

দোহার-নবাবগঞ্জ এখন আলোকিত অঞ্চল

সাদের হোসেন (বুলু), দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রকাশিত: মে ১০, ২০২৪, ০৪:২০ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান দোহার নবাবগঞ্জ উপজেলার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে কৃষি ও প্রবাসী অধ্যুষিত এ উপজেলা দুটিতে শান্তির সুবাতাস বইছে।

অসাম্প্রদায়িক চেতনার আলোকে আলোকিত দোহার ও নবাবগঞ্জ নামক এই জনপদে মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারীরা বসবাস করছেন সবাই মিলেমিশে। নেই কোন সাম্প্রদায়িক কোন্দল ও ধর্মীয় উন্মাদনা।

জানা যায়, দোহার ও নবাবগঞ্জে শান্তি ও উন্নয়ন একসাথে চলছে। নেই জমি, ঘর বাড়ি দখলের কোন পাঁয়তারা। এক সময় মাদক ও সন্ত্রাসীসহ ভূমি-খেকোদের কালো ছোবলে ক্ষতবিক্ষত এই জনপদে এখন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত হয়েছে। শতভাগ বিদ্যুৎ অধ্যুষিত এলাকা হওয়ার সুবাদে দোহার নবাবগঞ্জ এখন একটি আধুনিক উপশহরে রুপান্তর হওয়ার পথে।

আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলায় সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ফলে সরকারে অঙ্গীকার গ্রাম হবে শহর। এই পরিকল্পনা ব্যস্তবায়নে নগরের সুবিধা সম্প্রসারণ হচ্ছে এখন দোহার নবাবগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকাতে। কৃষিভিত্তিক এই এলাকার  কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য গ্রাম থেকে শহর বন্দরের বিক্রি করতে পারছেন খুব দ্রুত। এতে করে তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন আগের তুলনায় অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নারী কৃষক ও শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

আগে যেখানে অভিভাবকহীন, দরিদ্র, অসহায়, বিধবা নারী প্রবাসে ও শহরমুখী হতে চাইতেন এখন তারা নিজ বাড়ি, এলাকাতে নিজেরা ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যবসা ব্যাণিজ্য করে পরিবার পরিজন নিয়ে শান্তিতে বসবাস করছেন নিজে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

অপরদিকে শিক্ষানুরাগী সালমান এফ রহমান এমপির সার্বিক সহায়তা ও সরকারের শিক্ষা বৃত্তির ফলে শিশু ও নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে এই অঞ্চলে। বাল্যবিবাহ ও যৌতুকের মতো সামাজিক ব্যাধীরও অবসান হতে চলেছে প্রায়। গড়ে উঠেছে অসংখ্য অনলাইন ভোগপণ্যে বাজার।

প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য ডকুমেন্ট ও পার্সেল আসছে এই অঞ্চলে। ফলে আগের মতো ডাক বিভাগের উপর সপ্তাহব্যাপী আর ভরসা করে আর থাকতে হয় না। গ্যাসের মতো অতি প্রয়োজনীয় ভোগপণ্যটি এই অঞ্চলে চলে আসলে এই জনপদ মডেল উপজেলায় রুপান্তর হবে বলে মনে করেন স্থানীয় জনসাধারণ।

দেখা যায়, বর্তমান সময়ে দোহার ও নবাবগঞ্জে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ প্রবাসী অধ্যুষিত কৃষিভিত্তিক এই জনপদে বিভিন্ন অকৃষি খাতের বিকাশ ঘটছে। শতভাগ বিদ্যুৎ অধ্যুষিত অঞ্চল হওয়ায়, প্রতিটি গ্রাম এখন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হচ্ছে এবং অধিকাংশ ঘরে ওয়াইফাই সংযোগ রয়েছে ফলে স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট গ্রামের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দোহার নবাবগঞ্জের গ্রামগুলো।

এছাড়াও অধিকাংশ গ্রামে এজেন্ট ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে গেছে। এছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থাসহ ডায়াগনস্টিক মেডিকেল সেন্টারের ও সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ে হাতে কলমে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষগুলোকে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুমে রুপান্তর করার চেষ্টা চলছে।
নবাবগঞ্জে ১শ’৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও প্রায় ৪০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলায় দুটি সরকারি কলেজ ছাড়াও বেশ কয়েকটি বেসরকারি কলেজ রয়েছে। দাখিল মাদরাসাসহ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা এবং মক্তবভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

চলমান সময়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স নবাবগঞ্জ ও দোহারের সামাজিক পরিবর্তনে বড় ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। করোনা মহামারিতে যখন সারাদেশের সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন, চিকিৎসক ও ওষুধের সংকট দেখা দেয় সেই দুর্যোগময় সময়ে তিনি দোহার নবাবগঞ্জবাসীর পাশে অবস্থান গ্রহণ করেন। দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ সময় প্রচুর করোনায় আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণের মাধ্যমে সুস্থতা লাভ করেন।

নবাবগঞ্জ দোহার উপজেলায় বর্তমান সময়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন আগের তুলনায় বৃদ্ধি  পেয়েছে। গ্রামের পরিবারগুলোর জীবনমানেও উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। বিগত ১০ থেকে ১৫ বছর আগে যেখানে মাটির ছনের ঘর ছিল সেখানে উঠেছে এখন দেখা যাচ্ছে ইটের তৈরি দালান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপির সহায়তায় অসংখ্য ভূমিহীন পরিবার সরকারিভাবে পেয়েছে তাদের ঠিকানা ও আপন নিবাস। সরকারিভাবে বিভিন্ন, মসজিদ, মাদরাসা, মন্দির, গির্জা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জোটবদ্ধ কয়েক হাজার মানুষ মানুষ টিউবওয়েল পেয়েছে।

শহরে নাগরিক যে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে, নবাবগঞ্জ ও দোহারের বিভিন্ন গ্রামে বাস করেও অনায়াসে ভোগ করছে এখন শহরের সেই সুবিধা।

গ্রামের মানুষের উন্নয়নের বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহ-সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান দোহার নবাবগঞ্জ উপজেলার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে উন্নয়নের ছোঁয়ায় এখন আধুনিক উপজেলায় রুপান্তর হচ্ছে। সরকারিভাবে নবাবগঞ্জ সদরে মডেল মসজিদ হয়েছে। সাংস্কৃতিক শিল্পকলার বিকাশে সরকারিভাবে নবাবগঞ্জ সদরে শিল্পকলা অ্যাকাডেমির আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

এছাড়াও দোহার জয়পাড়া থেকে মাঝিরকান্দা ও বান্দুরা থেকে নবাবগঞ্জ হয়ে রাজধানীর গুলিস্থান পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণসহ সড়কটি সংস্কার হওয়ায় সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। এখন মাত্র ১ ঘণ্টায় নবাবগঞ্জ থেকে রাজধানীতে পৌঁছানো যাচ্ছে।

অপরদিকে নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শোল্লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ভূইয়া কিসমত বলেন, প্রবাসী অধ্যুষিত এই অঞ্চলে এখন নতুন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এছাড়া আইটি সেক্টরের বিকাশে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের বিষয়ে স্কুল কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকা ও হাট-বাজারে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা গড়ে তুলছে দেশি ও বিভিন্ন জাতের মুরগি, ভেড়া-ছাগলসহ ও উন্নত জাতের গরু খামার। জলাশয় পুকুর লিজ নিয়ে করা হচ্ছে মাছের চাষ। ধান-পাটের পাশাপাশি কৃষক এখন ভুট্টা, পেয়ারা, কুল বরই ফল ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদন করছেন। যার কারণে কৃষকের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। তেমনি ব্যবসাসহ অন্যান্য খাতের আয় বাড়ছে।

ঢাকার দোহার-নবাবগঞ্জের হাজারো মানুষের আনন্দ-বেদনা বুকে নিয়ে বয়ে চলা পদ্মা। এ নদী দোহার নবাবগঞ্জের মানুষের জীবনে অভিশাপ, আবার কখনো ধরা দিয়েছে আশীর্বাদ হয়ে। ফলে পদ্মার সৌন্দর্য মানুষের হৃদয়কে যেমন নাড়া দেয়, তেমনি এর সর্বনাশা রূপ মানুষকে করেছে সর্বহারা। পদ্মার সর্বজনবিদিত সর্বনাশা সে চরিত্রের অনেকটাই অবসান ঘটেছে আওয়ামী লীগ সরকারের নানামুখী মেগা উদ্যোগের মাধ্যমে।

এর অন্যতম একটি ঢাকার দোহারের নারিশা, মধুরচর, বিলাসপুর, মাহমুদপুর, নয়াবাড়ি ও নবাবগঞ্জের জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পদ্মানদীর বাম তীর রক্ষাবাঁধ প্রকল্প। দোহার-নবাবগঞ্জের বর্তমান এমপি সালমান এফ রহমানের কাছে নির্বাচনের আগে এলাকার মানুষের প্রধান দাবি ছিল- পদ্মার ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর এবং টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কারণ কয়েক প্রজন্ম ধরে পদ্মাপাড়ের হাজারো মানুষ ভাঙনের শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। প্রমত্তা পদ্মার করালগ্রাসে বিলীন হয়েছে হাজার-হাজার একর ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, হাটবাজার, স্কুল, মসজিদ, মন্দিরসহ নানা স্থাপনা। 

নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে মানুষের কোলাহল মুখরিত বিশাল জনপদ। লোকমুখে প্রবাদ বাক্যের মতো প্রচলিত ছিল পদ্মার ভাঙন রোধ করা দুঃসাধ্য এবং কখনই সম্ভব নয়। কিন্তু দোহার ও নবাবগঞ্জের মানুষের দুঃখ লাঘব করতে স্থানীয় এমপি সালমান এফ রহমান  সেই অসাধ্য কাজটি সম্ভব করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন নিয়ে পদ্মানদীর ভাঙন রোধ এবং পদ্মানদী শাসনের এক মেগা  প্রকল্প গ্রহণ করেন। যার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান  এমপির নাম দোহার নবাবগঞ্জের  ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তিনি এই এলাকার মানুষে কাছে চিরিঞ্জীবী হয়ে থাকবেন এমন প্রত্যাশা সকল মানুষের।

ইএইচ