নরসিংদী শহরে অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলেছে নিয়ন্ত্রণহীন ও অবৈধ অটো ও ব্যাটারি চালিত রিকশার চলাচল। এর ফলে শহরের প্রধান সড়কসহ মহাসড়কে তৈরি হচ্ছে ভয়াবহ যানজট।
পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে শহরের কেন্দ্রস্থল পর্যন্ত এসব অবৈধ যানবাহনের দাপটে নাজেহাল অবস্থায় পড়ছে সাধারণ মানুষ। প্রধান সড়কে এসব যান চলাচলের অনুমতি না থাকলেও দাপটের সঙ্গে চলছে।
শুধু যানজট নয়, নিরাপত্তার বিষয়েও উঠছে প্রশ্ন। প্রচলিত রিকশার চেয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার গতি বেশি হলেও ব্রেকিং সিস্টেম দুর্বল এবং চালকদের অধিকাংশই অনভিজ্ঞ হওয়ায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। সামান্য ফাঁকা জায়গা পেলেই তারা প্রধান সড়কে ঢুকে পড়ে, ফলে প্রতিদিনই ঘটছে অসংখ্য দুর্ঘটনা।
ট্রাফিক বিভাগ এই অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী এবং চাকরিজীবীদের উপর। সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছানো তো দূরের কথা, ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে বসে থাকতে হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পায়ে হেঁটে চলাফেরাও কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২০-৩০টি ছোট-বড় দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
নরসিংদী পৌর শহরের রাস্তায় ঠিক কত সংখ্যক অটো ও ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল করছে—তার কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, নরসিংদী শহরে প্রায় এক লক্ষ অটো ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে।
এ বিষয়ে নরসিংদী পৌর প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মৌসুমী সরকার রাখী বলেন, “আমার একার পক্ষে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এই সমস্যার সমাধানে প্রশাসন ও সুশীল সমাজের যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন।”
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শহরের বিভিন্ন গ্যারেজে অবৈধভাবে এসব যানবাহন তৈরি করা হচ্ছে। লাইসেন্স বা নিবন্ধনের কোনো প্রয়োজন না থাকায় গ্যারেজ মালিকরা বেপরোয়াভাবে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং লাখ লাখ টাকা আয় করছেন।
অনেকেই জমি বা স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে এসব যানবাহন কিনছেন, কারণ এতে খরচ কম ও লাভ বেশি। কেউ কেউ আবার অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে চার্জিং করছেন।
এ বিষয়ে নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল কুদ্দুস জানান, “অটো ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চার্জিংয়ে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”
সচেতন মহল ও সাধারণ জনগণের দাবি, এই অবৈধ ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
ইএইচ