বার্থ অপারেটর ও শিপিং এজেন্টদের মধ্যকার দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বে অস্থিরতা বিরাজ করছে চট্টগ্রাম বন্দরে। এতে আমদানি-রপ্তানির প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে সরাসরি ভোক্তাদের ওপর। নিত্যপণ্যের দামে এর বিরূপ প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে।
তবে আশার কথা হলো, আগামী ৬ মে বিকাল ৩টায় মন্ত্রণালয়ে নৌ-পরিবহন উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে এই দ্বন্দ্বের চূড়ান্ত সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম বন্দরের মুখপাত্র ও সচিব ওমর ফারুক।
তিনি আমার সংবাদকে জানান, “আমরা একটি যৌক্তিক দর নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম, কিন্তু তা মানা হয়নি। এজন্য উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।”
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিরসনে একাধিকবার চিঠি দিলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।
বার্থ অপারেটরস, শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটরস অ্যান্ড টার্মিনাল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলে একরাম চৌধুরী বলেন, “আমরা ২০০৭ সাল থেকে অনবোর্ড হ্যান্ডলিং চার্জ বাড়াইনি। বর্তমানে শ্রমিক মজুরি ও অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় পুরনো হারে কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়।”
অন্যদিকে, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, “বার্থ অপারেটররা ২০১৬ সাল থেকে প্রতি বছর অনবোর্ড হ্যান্ডলিং চার্জ ৪০ শতাংশের ওপর আরও ৪ শতাংশ হারে বাড়িয়ে আসছেন। এখন আবার নতুন করে চার্জ বৃদ্ধির প্রস্তাব অযৌক্তিক।”
এই চার্জ বাড়ানোর দাবি মেনে না নেওয়ায়, বার্থ অপারেটররা কনটেইনার লোড-আনলোডে শ্রমিক গ্যাং ও ট্রেইলার সংখ্যা কমিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে শিপিং এজেন্টদের অভিযোগ।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের জিসিবি টার্মিনালের ছয়টি জেটিতে গিয়ার্ড (ক্রেনসহ) জাহাজ ভেড়ে, যেখানে প্রতিটি জাহাজে সাধারণত দুটি গ্যাং ও ১২টি ট্রেইলার সরবরাহ করা হয়। কিন্তু শিপিং এজেন্টদের দাবি, এখন এই সংখ্যা অর্ধেকে কমিয়ে আনা হয়েছে, ফলে কার্যক্রমে বিলম্ব হচ্ছে।
বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানের দক্ষ নেতৃত্বে বন্দরে একের পর এক সফলতা এলেও, এই দ্বন্দ্ব একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। ৬ মে বৈঠকে এর সমাধান হলে, চট্টগ্রাম বন্দরে স্বস্তি ফিরবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।
ইএইচ