ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া মিস কেস সাজিয়ে ১৮ একর ১৫ শতাংশ জমি আত্মসাতের অভিযোগে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আমির হোসেন আমু ও অপসোনিন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী কয়েকটি পরিবার।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বোরহান উদ্দিন মিলন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, সাবেক খাদ্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু অপসোনিন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের অংশীদার এবং রাকিব খান ও রউফ খানের আত্মীয়। তাদের যোগসাজশে ও আমুর প্রভাব খাটিয়ে ভুয়া মিস কেস (মামলা নম্বর ২৩০/৬৫-৬৬) সাজিয়ে সাতটি পরিবারের প্রায় ১৮ একর ১৫ শতাংশ জমি আত্মসাৎ করা হয়েছে।
মিলন আরও বলেন, নলছিটি এসিল্যান্ড অফিসের ১২ নম্বর রেজিস্ট্রার বইতে উল্লিখিত মিস কেসের কোনো অস্তিত্ব নেই। অথচ, অপসোনিনের মালিক রাকিব খানের নামে বরিশাল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ৪৩১৯/১৯ ও ৩৮২৮/২০০০ নম্বর দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। এছাড়া দলিলে উল্লেখ করা হয়েছে জমিটি জাগুয়া ইউনিয়নের ১২৭ নম্বর জে.এল. নম্বরভুক্ত, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেটি ৫৪ নম্বর জে.এল. এর জমি।
তিনি অভিযোগ করেন, এসব দলিল জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, রাকিব খান, রউফ খান ও বজলুর রহমান রাঢী কীর্তনখোলা নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে এবং নদী ভরাট করে শিল্প-কারখানা নির্মাণ করেছেন, যা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। সেই সঙ্গে অসংখ্য দরিদ্র মানুষের জমি ও সরকারের খাস জমিও জবরদখল করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, তারা বিষয়টি নিয়ে ঝালকাঠির আদালতে মামলা করেছেন, তবে ২৩ বছরেও আসামিরা আদালতে হাজির হননি। মামলায় আদালত অবমাননার কারণে তাদের বিরুদ্ধে জি.আর. মামলা নং ৩১/২৫ এবং সি.আর. মামলা নং ১৪৭/২৫ এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
বক্তারা আরও দাবি করেন, আমির হোসেন আমুর প্রভাব খাটিয়ে বহু গরীব অসহায় মানুষের ভূমি দখল করা হয়েছে, যার সত্যতা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সুষ্ঠু তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, অপসোনিন ফার্মার অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা—বজলু রাঢী, মো. পারভেজ আহমেদ, রফিক আহমেদ, জসিম উদ্দিন ও ফিরোজ আহমেদ—এই জালিয়াতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জালাল আহমেদ খান, জাহাঙ্গীর খান, সিরাজুল ইসলাম গাজী, সাইফুল ইসলাম এবং অ্যাডভোকেট সাইফুল।
এ বিষয়ে জানতে অপসোনিন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের কর্মকর্তা রফিক আহমেদকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ইএইচ