দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর আবারও চালু হতে যাচ্ছে যশোরের অভয়নগরে অবস্থিত বেঙ্গল টেক্সটাইল মিল। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন (বিটিএমসি) মিলটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এতে আবারও কর্মসংস্থানের আশায় বুক বাঁধছেন এলাকার শত-শত শ্রমিক।
উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামে যশোর-খুলনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এই মিলটি ১৬.৩২ একর জমির ওপর গড়ে ওঠে। মিলচত্বরে রয়েছে দুটি পৃথক কারখানা। এক সময় এখানে প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। ২০২৩ সালের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মিলটি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে মিল এলাকা প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মিলের ভবনগুলোর দেয়ালে ফাটল ধরেছে, ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি পড়ে আছে অযত্ন-অবহেলায়। ছাদ চুইয়ে পড়া পানি থেকে রক্ষায় কিছু যন্ত্রে পলিথিন ব্যবহার করা হয়েছে। মিল এলাকাজুড়ে আগাছা, আবর্জনা আর ধ্বংসপ্রায় পরিবেশ বিরাজ করছে।
বেঙ্গল টেক্সটাইল মিল প্রথমে ১৯৬২ সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের ব্যবসায়ী হাজী নজির আহম্মেদের তিন ছেলে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭২ সালে স্বাধীনতার পর মিলটি জাতীয়করণ করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে চীনের সহায়তায় স্থাপিত হয় দ্বিতীয় ইউনিট। কিন্তু সময়ের সঙ্গে মেশিনের আধুনিকায়ন না হওয়া, উৎপাদন ব্যয় বাড়া এবং ব্যবস্থাপনার দুর্বলতায় মিলটি লোকসানে পড়ে। একপর্যায়ে চালু রাখা সম্ভব হয়নি।
পুনরায় মিল চালুর খবরে স্বস্তি ফিরেছে শ্রমিক ও স্থানীয়দের মুখে। মিলের সাবেক সিবিএ নেতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে অনেক শ্রমিক কাজ করতেন। মিল বন্ধ হওয়ার পর অনেকে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। চালু হলে আমরা আবার বাঁচতে পারব।’
মিলের বর্তমান ইনচার্জ মো. আতিকুর রহমান জানান, ‘বিটিএমসির চেয়ারম্যান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও পাট করপোরেশনের কর্মকর্তারা সম্প্রতি মিলটি পরিদর্শন করেছেন। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) পদ্ধতিতে পুনরায় চালুর প্রস্তুতি চলছে।’
এ বিষয়ে বিটিএমসির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম জাহিদ হাসান বলেন, ‘বন্ধ থাকা সব মিল পুনরায় চালুর বিষয়ে সরকার আন্তরিক। বেঙ্গল টেক্সটাইল মিলও তার ব্যতিক্রম নয়। পার্টনার পেতে কিছুটা সময় লাগছে। তবে আমরা আশাবাদী।’
বিআরইউ