ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার চাপোড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আফিজুল ইসলামকে সরিয়ে তাঁর স্থানে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের প্রভাব কাজে লাগিয়ে প্রবাসফেরত মঞ্জুরে খোদাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে পীরগঞ্জের চাপোড় গ্রামে ৩৩ শতক জমি দান করে ‘চাপোড় বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করেন আফিজুল ইসলাম। প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। দাতাদের সহায়তায় জমি ভরাট করে ঘর নির্মাণ করে শুরু হয় পাঠদান।
কিন্তু ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় আফিজুল ইসলামের নাম বাদ দিয়ে মঞ্জুরে খোদার নাম প্রধান শিক্ষক হিসেবে পাঠানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, তখনকার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান নিজ ভাই মঞ্জুরে খোদাকে প্রধান শিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রী আকতার বানু ও অপর এক আত্মীয় রত্না রানীকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠান।
প্রসঙ্গত, যাঁকে প্রধান শিক্ষক করা হয়েছে, সেই মঞ্জুরে খোদা ২০০১ সালে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগেই বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন এবং ২০০৮ সালে দেশে ফেরেন। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে বিদ্যালয়ে কোনো পাঠদানে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন না বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে।
অফিস-আদালতে দৌড়ঝাঁপ করেও কোনো সুরাহা না পেয়ে বর্তমানে হাইকোর্টে মামলা করেছেন আফিজুল ইসলাম। এলাকাবাসী, শিক্ষক ও জমিদাতারা এই ‘জালিয়াতির’ সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে বর্তমান প্রধান শিক্ষক মঞ্জুরে খোদা বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একটি মহল ষড়যন্ত্র করে আমাকে হেয় করতে চাইছে। আদালতে বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে।’
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘দুই পক্ষের কাগজপত্র যাচাই করে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধান করলে অনেক অনিয়মের চিত্র বেরিয়ে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
বিআরইউ