সরকারি কর্মচারীর জমি দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৫, ০১:২১ পিএম

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার লুলিয়াকান্দি গ্রামে সরকারি কর্মচারী মো. আব্দুল বয়ানের জমি দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে পার্শ্ববর্তী এলাকার তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

অভিযোগে বলা হয়, মৃত আলী নেওয়াজের ছেলে আ. রাশিদ ভুট্টু (৫০), মৃত হাজী হাফিজ উদ্দিনের ছেলে বাদল মিয়া এবং মো. আবদুল করিম মিলে জমিটি দখল করেন।

এ বিষয়ে আব্দুল বয়ানের ভাতিজা মো. সাইফুল মিয়া বাদী হয়ে গত ১৫ মে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি পিটিশন দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মো. আব্দুল বয়ান ঢাকার মতিঝিল গণপূর্ত উপ-বিভাগ-২ এ অফিস সহায়ক (কাম কম্পিউটার অপারেটর) হিসেবে কর্মরত। তিনি লুলিয়াকান্দি গ্রামের মৃত রিয়াছত আলীর ছেলে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে আব্দুল বয়ান মৃত আলী নেওয়াজের কাছ থেকে সাফ কবলা দলিলের মাধ্যমে ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৪২ নম্বর দাগে মোট ৫৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। পরবর্তীতে পারিবারিক প্রয়োজনে—বিশেষ করে ছেলের আমেরিকায় যাওয়ার খরচ জোগাতে—তিনি ওই জমির একটি অংশ বিক্রির প্রস্তাব দেন।

এ সময় বাদল মিয়া ১৮ লাখ টাকা দামে জমি কিনতে সম্মত হন এবং বায়না বাবদ ১৬ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। এর মধ্যে ২ লাখ টাকা পরবর্তীতে বাদল মিয়ার ভাগিনাকে ফেরত দেওয়া হয়।

পরে বাদল মিয়া জমির পুরো মালিকানা দাবি করে জমিটি দখলে নিয়ে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। এ বিষয়ে কয়েকবার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং তৎকালীন ইউএনও-র উপস্থিতিতে শালিস বৈঠক হলেও বিষয়টির মীমাংসা হয়নি।

লুলিয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা মো. ফেরদৌস মিয়া বলেন, “মো. বয়ান মিয়া ও বাদল মিয়ার মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। সাবেক ইউএনও একবার শালিস করে দিলেও বাদল মিয়া সেটা মানেননি। কিছুদিন আগে দেখি তারা বয়ান সাহেবের জমি দখল করে নিয়েছে।”

আব্দুল বয়ান বলেন, “আমি ৫৯ শতাংশ জমি ১৯৯৬ সালে কিনেছি। পরে প্রয়োজন হলে ৩০ শতাংশ জমি বাদল মিয়াকে দিতে রাজি হই এবং তাকে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দিই। তবে বাদল মিয়া তার দখলে থাকা বাড়ি ও পুকুরের জমি আমাকে ফিরিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় আমি আইনের আশ্রয় নিই।”

অপরদিকে, বাদল মিয়া বলেন, “আমি ৫৯ শতাংশ জমির জন্য ১৬ লাখ টাকা বায়না দিয়েছি। বাকি ২ লাখ টাকা রেজিস্ট্রির সময় দেওয়ার কথা ছিল। দরবারে সিদ্ধান্ত হয়েছিল আমাকে ৩০ শতাংশ জমি ও ৯ লাখ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু টাকা না পাওয়ায় আমি পুরো জমি দখল করে নিয়েছি।”

এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগী ও এলাকাবাসী।

ইএইচ