সিলেটে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বন্যার আতঙ্ক

সিলেট ব্যুরো: প্রকাশিত: মে ২১, ২০২৫, ০৪:৩৭ পিএম

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সিলেট অঞ্চলে ভারী বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। এখনো কোনো নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও সীমান্তবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে। শুরু হয়েছে ভাঙন, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট। জাফলংয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব ধরনের পর্যটন কার্যক্রম।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট শহরে ৯২ মিলিমিটার, লালাখালে ২১৬ মিলিমিটার, জাফলংয়ে ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে সুরমা, কুশিয়ারা, পিয়াইন, সারী ও লোভা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গোয়াইনঘাটে পিয়াইন নদীর পানি ১০২ সেন্টিমিটার, সারী নদীর পানি ৮৯ সেন্টিমিটার, জাফলংয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকা দ্রুত প্লাবিত হয়েছে। নদীর তীব্র স্রোতে আশপাশের বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়েছে। টুরিস্ট পুলিশের ওসি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘‘ভাসমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’’

কানাইঘাটেও লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ও পশ্চিম ইউনিয়নে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েকশ পরিবার। ভারী বৃষ্টিতে পাকা ও কাঁচা সড়ক ভেঙে পড়েছে। লোভা নদীতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র স্রোত। স্থানীয় প্রশাসনের বরাতে জানা গেছে, তিনটি নদীর পানি বিপৎসীমার ২.৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৯টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে। সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, ভারী বৃষ্টিপাতে দুর্ভোগ বেড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের। দিনমজুরদের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে, স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে দুর্ভোগে।

তবে কিছুটা স্বস্তির খবর হলো, বৃষ্টিপাত মঙ্গলবার রাত থেকে কিছুটা কমেছে। পাশাপাশি কৃষকরা এ বছর নির্বিঘ্নে বোরো ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রায়হান পারভেজ রনি।

তবে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে পাহাড়ি ঢলের কারণে যেকোনো সময় পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে নদীর পানি দ্রুত বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বিআরইউ