প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে দেশের বাজারে মিলবে সুস্বাদু ও বিখ্যাত নওগাঁর আম। রসাল, মিষ্টি আর সুগন্ধি স্বাদের জন্য সারা দেশে পরিচিত এই আম বাজারজাত করার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলায়।
জেলার কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, আজ থেকে গোপালভোগ জাতের আম বাজারে বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালি ও অন্যান্য জাতের আমও বাজারে ছাড়ার অনুমতি মিলবে।
নওগাঁ সদর, মহাদেবপুর, সাপাহার, পত্নীতলা ও মান্দা উপজেলায় ঘুরে দেখা গেছে, বাগান থেকে আম সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। কেউ কেউ ট্রাকে করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আম পাঠানো শুরু করেছেন। স্থানীয় বাজারগুলোতেও আম আসতে শুরু করেছে।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমে যাতে কেমিক্যাল বা ফরমালিন ব্যবহার না হয়, সে বিষয়ে আমরা কঠোর নজরদারি করছি। চাষিদের আম গাছ থেকে নির্ধারিত সময়ের আগেই আম সংগ্রহ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
নওগাঁ কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আম দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহের পাশাপাশি রপ্তানিতেও যাবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।
স্থানীয় আমচাষি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আবহাওয়া ভালো ছিল, এবার ফলনও ভালো হয়েছে। দামও যদি ঠিকঠাক পাই, তাহলে একটা ভালোমতো আয় হবে।’
নওগাঁর আমের স্বাদ ও মানের জন্য এরই মধ্যে দেশে-বিদেশে রয়েছে আলাদা খ্যাতি। তাই ভোক্তাদের মধ্যে আম নিয়ে দেখা দিয়েছে বাড়তি আগ্রহ। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘নওগাঁর আম চাই’ ক্যাম্পেইনেও যুক্ত হচ্ছেন।
জেলার প্রশাসন এবং কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে যাতে আমের বাজারে কৃত্রিম সংকট না হয় কিংবা কোনো ধরনের ভেজাল না ঢুকে পড়ে, সে বিষয়ে প্রশাসনিক তদারকি থাকবে জোরদার।
নওগাঁর মাটির স্বাদে বেড়ে ওঠা এই আম দেশের মানুষের রসনাতৃপ্তি যেমন মেটাবে, তেমনি চাষিদের মুখেও হাসি ফোটাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বিআরইউ