মাদারীপুর সদর উপজেলার সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো বর্তমানে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ঘরের টিনে মরিচা ধরেছে, ছিদ্র হয়ে গেছে; কোথাও কোথাও টিন খুলে পড়েছে। তাই একটু বৃষ্টি হলেই ফুটো চাল দিয়ে পানি পড়ে ঘরের ভেতর। উপায় না পেয়ে বসবাসকারীরা পলিথিন, পাটখড়ি ও কাপড়ের সাহায্যে ছাউনির গর্তগুলো বন্ধ করে কোনো রকমে দিন পার করছেন।
দেখা যায়, সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের চর দক্ষিণপাড়া এলাকার সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত মনি ফকির ২০০৭ সাল থেকে ওই ঘরে পরিবার নিয়ে বাস করছেন। এখন সেই ঘরটি বসবাসের একেবারেই অনুপযোগী। পাকা মেঝে ভেঙে গেছে, টিনের চালায় ছিদ্র, লোহার কাঠামোতে মরিচা—সব মিলিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এক পরিবেশ। বৃষ্টির রাতে পরিবার নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটান তিনি।
৭০ বছর বয়সী ফুলমতির ঘরেও একই অবস্থা। বৃষ্টির পর ঘরের মেঝে কাদায় পরিণত হয়, শুকাতে দিতে হয় সব জিনিসপত্র। এমন পরিস্থিতি আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় প্রতিটি ঘরেই বিদ্যমান। কেউ কেউ নিজের উদ্যোগে চালায় পলিথিন লাগিয়ে সাময়িকভাবে পানি পড়া ঠেকানোর চেষ্টা করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৯০টি পরিবারের জন্য নির্মিত ৯টি টিনশেড ব্যারাক ঘর বর্তমানে ভেঙে পড়ার মতো অবস্থায় রয়েছে। কোনো রকমে বসবাস করলেও স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিরাপত্তা নিয়ে তারা শঙ্কিত। আশ্রিতরা জানান, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ঘরগুলো এখন বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। তবুও অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ না থাকায় বাধ্য হয়ে এসব ঘরেই দিন কাটছে তাদের।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, “আমি কুনিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো পরিদর্শন করেছি। আপাতত এসব ঘরের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে সংস্কার কাজ শুরু হবে। শুধু দু-একটা ঘরের সমস্যা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যেত, কিন্তু প্রায় সব ঘরেরই একই অবস্থা। তাই কিছুটা সময় লাগবে।”
উল্লেখ্য, প্রকল্পটিতে রয়েছে ৯টি ব্যারাক ভবন, যেখানে প্রতিটি ব্যারাকে ১০টি করে কক্ষ রয়েছে। মোট ৯০টি পরিবারকে একটি করে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ১২টি শৌচাগার ও ৪টি গোসলখানা। তবে কবরস্থান, খেলার মাঠ ও সমবায় সমিতির কার্যালয়সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
ইএইচ