যশোরের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মামলা জটিলতার কারণে গত ১২ বছর ধরে একই ঠিকাদার রোগীদের খাবার (পথ্য) সরবরাহ করে আসছেন।
অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা ও যশোরের এক ঠিকাদারের যোগসাজশে এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে নতুন দরপত্র আহ্বানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ঠিকাদাররা।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে খাবার সরবরাহের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। সে অনুযায়ী অভয়নগরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মতিয়া এন্টারপ্রাইজ কাজটি পায়। এরপর, ২০১৩ সালের ২৩ জুন এক ঠিকাদার টেন্ডার স্থগিত চেয়ে যশোর জেলা জজ কোর্টে মামলা (সিআর মামলা নং–৩৪/১৩) দায়ের করেন। মামলা চলমান থাকায় স্বাস্থ্য বিভাগ আর নতুন কোনো দরপত্র আহ্বান করতে পারেনি। ফলে, গত ১২ বছর ধরে একই প্রতিষ্ঠান হাসপাতালের খাবার সরবরাহ করে আসছে।
স্থানীয় ঠিকাদারদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে একই প্রতিষ্ঠান খাবার সরবরাহ করায় দুর্নীতি ও অনিয়মের সুযোগ তৈরি হয়েছে। তারা দাবি করেন, মেসার্স মতিয়া এন্টারপ্রাইজ নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৭ মে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালায়। দুদকের অভিযানে মাছ ও ডিমের সাইজ ছোট, ওজনে কম, লবণ ও মসুর ডালের গুণগত মান নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। এ বিষয়ে সন্তোষজনক ব্যাখা প্রদানের জন্য ঠিকাদারকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তারা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি এবং ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করে নতুন দরপত্র আহ্বানের দাবি জানান।
এ বিষয়ে মেসার্স মতিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, "২০১৩ সালে যশোরের এক ঠিকাদার মামলাটি করেন। দীর্ঘদিন দরপত্র আহ্বান বন্ধ থাকায় আমরাও সমস্যায় পড়েছি। মামলা নিষ্পত্তি হলে আর এ কাজে থাকব না।" দুদকের অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, "হাসপাতালের মেনু অনুযায়ীই খাবার সরবরাহ করা হয়। কোনো অনিয়ম থাকলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী। দুদকের কোনো চিঠি এখনো আমার হাতে পৌঁছায়নি।"
অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলীমুর রাজিব বলেন, "মামলা জটিলতার কারণে রোগীদের খাবার সরবরাহে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা যাচ্ছে না। মামলা নিষ্পত্তি হলেই স্বাস্থ্য বিভাগ নতুন টেন্ডার দেবে। বর্তমানে প্রতি রোগীর জন্য ১৭৫ টাকা ব্যয়ে খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।"
ইএইচ