পবিত্র ঈদুল আজহার পর ময়মনসিংহে কাঁচা চামড়ার বাজারে চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দাম পড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তারা অভিযোগ করছেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যের অনেক নিচে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে, যার ফলে ব্যাপক লোকসানে পড়তে হচ্ছে তাদের।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত ২৫ মে ঢাকায় গরুর কাঁচা চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুটে ১,৩৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ১,১৫০ টাকা নির্ধারণ করে।
তবে ময়মনসিংহের বাজারে এই আদেশ বাস্তবায়িত হচ্ছে না। খুচরা ও ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনছেন মাত্র ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সিন্ডিকেট ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এই অবস্থায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।
স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী জয়ন্ত বড়ুয়া বলেন, “চামড়া সংরক্ষণের খরচই পড়ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এর ওপর যদি দাম ৪০০–৬০০ টাকার মধ্যে থাকে, তাহলে লাভ তো দূরের কথা, লোকসান গুনতে হচ্ছে।”
ট্যানারি মালিকদের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী চামড়া কেনা সম্ভব হচ্ছে না। লবণ, পরিবহণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় তারা চাপে রয়েছেন।
ব্যবসায়ীদের মতে, সরকারি নজরদারি ও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এই অস্থিরতা কমানো সম্ভব। তারা চান মাঠ পর্যায়ে তদারকি বাড়ানো হোক এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সহায়তা নিশ্চিত করা হোক।
উল্লেখ্য, এক সময় বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাত ছিল চামড়া শিল্প। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মূল্য পড়ে যাওয়া, অব্যবস্থাপনা এবং সুষ্ঠু নীতির অভাবে এই শিল্প ক্রমেই সংকটে পড়ছে। ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলার চামড়া ব্যবসায়ীরা এখন আশাবাদী—সরকার যদি কার্যকর হস্তক্ষেপ করে, তবে আবারও এই শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে পারে।
ইএইচ