ঈদুল আজহার ছুটিতে কুয়াকাটায় পর্যটকের ঢল

ওমর ফারুক, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২৫, ০৪:০৮ পিএম

ঈদুল আজহার ১০ দিনের টানা ছুটিকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে নেমেছে পর্যটকের ঢল। উত্তাল সমুদ্র, দখিনের হালকা বাতাস আর ঢেউয়ের ছন্দে ভেসে বেড়াচ্ছেন আগত ভ্রমণপিপাসুরা। কেউ বন্ধুদের সঙ্গে মেতে উঠেছেন হৈ-হুল্লোড়ে, কেউবা সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন নৈসর্গিক সৌন্দর্য। আবার কেউ ঘোড়া, ওয়াটার বাইক কিংবা মোটরসাইকেলে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো।

সাগরকন্যা কুয়াকাটার তিন নদীর মোহনা, লেম্বুর বন, ঝাউবাগান ও গঙ্গামতি সৈকতসহ সব পর্যটন স্পটেই দেখা গেছে পর্যটকদের সরব উপস্থিতি। জিরো পয়েন্ট থেকে সৈকতের পূর্ব-পশ্চিমে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে পর্যটকেরা উপভোগ করছেন সমুদ্রস্নান ও আনন্দঘন সময়। সৈকতের শামুক-ঝিনুকের দোকান, ডাব বিক্রেতা, চায়ের দোকান ও খাবার হোটেলগুলোতেও বেড়েছে ভিড়।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঈদের প্রথম দুই দিন তুলনামূলক পর্যটকের আনাগোনা কম ছিল। তবে চতুর্থ দিন মঙ্গলবার সকাল থেকেই পর্যটক সমাগম বাড়তে শুরু করে। কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির জানিয়েছেন, শুক্রবার পর্যন্ত পর্যটকের এই ঢল অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পর্যটক তানিয়া বলেন, “ঈদের এই লম্বা ছুটিতে ফ্যামিলি নিয়ে কুয়াকাটায় এলাম। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই মুগ্ধকর।”

আরেক পর্যটক সারনিন বলেন, “দক্ষিণের বাতাস আর সমুদ্রের মোহনীয় গর্জন যেন প্রাণটা শীতল করে দিল। সারাদিন ঘোরাঘুরির পর এখন মনে হচ্ছে ছাতা বেঞ্চিতেই ঘুমিয়ে পড়ি।”

পর্যটকদের নিরাপত্তায় রয়েছে কড়া নজরদারি। কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর তাপস চন্দ্র জানিয়েছেন, সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি কাজ করছে নৌ-পুলিশ, থানা পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

এদিকে কুয়াকাটার সুনাম ও পর্যটন ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ফেরাতে পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চালাচ্ছে ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক)। সংগঠনের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, পর্যটকদের কোনো অভিযোগ পেলে দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব শরীফ জানান, “পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী সবধরনের সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে এবারের আগাম বুকিং তুলনামূলকভাবে কম।”

সব মিলিয়ে ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটা উপভোগ করতে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে ‘সাগরকন্যা’। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধায় যেন তাদের আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা আরও গভীর হয়েছে।

ইএইচ