বিএনপির কমিটি নিয়ে উত্তেজনা: ডিবির হাতে দুই নেতা আটক, একজন মুক্ত

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৫, ০৩:১২ পিএম

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও বিক্ষোভের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। 

এ ঘটনায় রোববার রাতে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অভিযানে আটক হন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কমিটির সদস্য হেলাল উদ্দিন এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ।

সোমবার সকাল ৮টার দিকে যাচাই-বাছাই শেষে হেলাল উদ্দিনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও পারভেজ আহমেদ এখনও পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

গাজীপুর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক জানান, আটক দুই নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ থাকায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। যাচাই শেষে একজনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর জেলা বিএনপি সম্প্রতি কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌর বিএনপির পুরোনো কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। এতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হন মৌচাক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদার এবং সদস্যসচিব এম আনোয়ার হোসেন। পৌর বিএনপির আহ্বায়ক করা হয় মামুদ সরকারকে এবং সদস্যসচিব মহসিন উজ্জামানকে। দুই কমিটিতে মোট সদস্য সংখ্যা ৪১।

নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকেই উপজেলা বিএনপির মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ ও তাঁর অনুসারীরা শনিবার রাতেই বিক্ষোভ করেন। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে মিছিল বের করেন। একই সময়ে নতুন কমিটির সমর্থকেরাও পাল্টা মিছিল বের করলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ইট-পাটকেল নিক্ষেপে অন্তত ১৫ জন আহত হন, যাদের কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা পৌঁছায় এবং দুপুর ১২টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।

ঘটনার পর রাতে কালিয়াকৈর থানা ও জেলা ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে সাহেববাজার থেকে হেলাল উদ্দিন এবং হিজলতলী এলাকা থেকে পারভেজ আহমেদকে আটক করা হয়।

এ বিষয়ে কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মান্নান বলেন, “আটকের বিষয়ে বিস্তারিত অভিযোগ যাচাই করে দেখা হচ্ছে।”

গোয়েন্দা কার্যালয় থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সাংবাদিকদের হেলাল উদ্দিন বলেন, “বিএনপির ভেতরে কিছু দুষ্টচক্র রয়েছে, যারা আগের ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। এখন তারা রাজনীতিতে নতুন আসা এক নেতার ছায়ায় অবস্থান করছে, যার ফলে দলে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে।”

ইএইচ