‘ধানের শীষ’ নিয়ে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা

মাগুরায় দুই আসনে কারা পাচ্ছেন বিএনপির মনোনয়ন?

মাগুরা প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৫, ১২:২১ পিএম

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ বাড়ছে। বিএনপিও পুনরায় সক্রিয় হয়েছে। লন্ডনে দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকারের রোডম্যাপ প্রকাশের পর বিএনপির তৃণমূল পর্যায়েও আলোড়ন শুরু হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে মাগুরার দুটি আসনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক কার হাতে যাবে, তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে তুমুল আলোচনা।

মাগুরা-১: মনোয়ার না অন্য কেউ?

সদর ও শ্রীপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত মাগুরা-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন দলটির জেলা কমিটির সদস্য সচিব আলহাজ্ব মনোয়ার হোসেন খান। ২০১৮ সালে কারাবন্দি অবস্থায় ভোটে অংশ নেওয়া এই নেতা এখন তৃণমূলে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। দলের আন্দোলন ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকায় অনেকের মতে, মনোনয়নের দৌড়ে তিনিই এগিয়ে।

তবে এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন আরও কয়েকজন—জেলা আহ্বায়ক আলী আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবীব কিশোর, সাবেক মন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) মজিদ উল হকের কন্যা ডা. সিমিন এ মজিদ-অঞ্জু, আলমগীর হাসান সোহান, শর্মিলা রহমান সিথী ও সাবেক নারী সংসদ সদস্য বেগম মমতাজ কবীরসহ একাধিক ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক।

তৃণমূল নেতাকর্মীদের বক্তব্য, ‘যারা আন্দোলনে ছিলেন, তাঁদেরকেই এবার অগ্রাধিকার দিতে হবে। হঠাৎ এসে মনোনয়ন প্রত্যাশা করা গ্রহণযোগ্য নয়।’

মাগুরা-২: এগিয়ে নিতাই রায়

মাগুরা-২ আসনে (শালিখা ও মহম্মদপুর) দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী। দলে তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও অবস্থানকে বিবেচনায় রেখে অনেকেই মনে করছেন, তার প্রার্থীতা প্রায় নিশ্চিত।

তবে বিকল্প হিসেবে আলোচনায় আছেন সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন, রিয়াজউদ্দিনসহ কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী।

ঐক্যের ডাক

দীর্ঘদিন ধরে জেলা বিএনপিতে কোন্দল, গ্রুপিং ও সংঘর্ষের চিত্র থাকলেও এবার নির্বাচনের গুরুত্ব উপলব্ধি করে নেতাকর্মীরা ঐক্যের ডাক দিচ্ছেন। তাদের দাবি, ‘নির্যাতিত ও পরীক্ষিত নেতাদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠন করতে পারলে বিজয়ের পথ সুগম হবে।’

গত ১৫ বছর ধরে মাগুরার দুটি আসনেই আওয়ামী লীগের দখল থাকলেও নির্বাচনী স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে প্রতিবারই। তবে এইবার আন্তর্জাতিক চাপ ও একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের আলোচনায় ভোটারদের মধ্যে ভরসা ফিরে আসছে।

একজন তরুণ ভোটার বলেন, আমরা আর ভোটের নামে তামাশা চাই না। এবার যদি অবাধ নির্বাচন হয়, তাহলে আমরাই ঠিক করব আমাদের নেতা কে হবেন।

বিআরইউ