টাঙ্গাইল শহরের কান্দাপাড়া যৌনপল্লীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে যৌনকর্মীদের ১২টি বসতঘর ও ১০টি দোকান সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, সকালে পল্লীর এক ঘরে রান্নার সময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। অনেকেই তখন ঘুমিয়ে ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন পাশের ঘরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের লেলিহান শিখায় ঘরের ফ্রিজ, আসবাবপত্র, নগদ টাকা, জমি-জমার দলিলসহ সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
খবর পেয়ে টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ৩০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ক্ষতিগ্রস্ত যৌনকর্মী সালমা, সন্ধ্যা, আলো এবং বাসিন্দা শুকুর, লাল মিয়াসহ অনেকে জানান, তারা ঘুম থেকে উঠে আগুন দেখে প্রাণভয়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। কারও কিছুই বাঁচাতে পারেননি। পড়নের কাপড় ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই।
নারী মুক্তি সংঘের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারা বেগম বলেন, “আমাদের মেয়েরা এখন নিঃস্ব। খাওয়ার কিছু নেই, পরার কাপড় নেই, মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।” তিনি জেলা প্রশাসক, পৌর প্রশাসক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।
এদিকে, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল জানান, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে তিনি দলীয়ভাবে খোঁজখবর নিয়েছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “পুনর্বাসনের বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পৌর প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সহযোগিতা করব।”
টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার এসএম হুমায়ুন জানান, “আমরা সকাল ১১টার পর সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং ৩০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে তদন্তের পর প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যাবে।”
ইএইচ