যশোরের অভয়নগরে শ্রেণিকক্ষের পাশেই কীটনাশক স্প্রের ফলে বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে ছয়জন শিশু শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
বুধবার দুপুরে অভয়নগর ও নড়াইল সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী ৭৮ নম্বর চাকই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষার্থীরা হলো—চাকই গ্রামের শেখ সেলিমের মেয়ে সাদিয়া ইসলাম, তৌহিদুর রহমানের মেয়ে সানজিদা খাতুন, সুইট বিশ্বাসের মেয়ে সাউদা ইসলাম (তিনজনই পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী); বিপ্লব শেখের মেয়ে মর্জিনা আক্তার বিলকিস, ইসমাইল মীরের মেয়ে ইয়াছমিন খাতুন এবং উম্মে আইমান (তিনজনই চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী)।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য অনুযায়ী, শ্রেণিকক্ষে অবস্থান করার সময় হঠাৎ তীব্র দুর্গন্ধে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে পেট ব্যথা, বমি ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শামীমা সুলতানা বলেন, “জোহরের নামাজের পর হঠাৎ ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির মেয়েদের চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে দেখি কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরে দ্রুত তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।”
তিনি আরও জানান, “স্কুলের সীমানার লাগোয়া জমিতে আবু বক্কার শেখের ছেলে ইসমাইল শেখ সবজি বাগানে কীটনাশক স্প্রে করছিলেন। তাকে বারবার নিষেধ করা হলেও তিনি কথা না শুনে স্প্রে চালিয়ে যান। সেই গ্যাসেই শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হয়েছে।”
এ বিষয়ে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহফুজুর রহমান সবুজ বলেন, “৬ জন শিশু শিক্ষার্থী কীটনাশকের বায়বীয় গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ ধরনের গ্যাস ফুসফুসে প্রবেশ করলে নিউমোনিয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই তাদের ভর্তি করে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।”
এ ঘটনায় অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আলীম জানান, “আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয়দের মতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে অনিরাপদভাবে কীটনাশক ব্যবহার রোধে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় এমন দুর্ঘটনা আরও ঘটতে পারে।
ইএইচ