ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উপজেলা শাখার নবগঠিত সার্চ কমিটিতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ ঘরানার নেতাদের পুনর্বাসনের অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থনে আহত যোদ্ধারা ও তাদের পরিবার।
সোমবার দুপুরে নাসিরনগর উপজেলা সদরের কলেজ মোড়ের শহীদ ইমরান চত্বরে আয়োজিত এই মানববন্ধনে আহতরা সরাসরি ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার দাবিও জানান।
মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন গত বছরের ৫ জুলাই রাজধানীর চকবাজারের চানখারপুল এলাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়া আন্দোলনকারী তাহজিন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, “চাইনিজ রাইফেলের গুলিতে আমার ডান হাত চিরতরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথচ আমাদের রক্ত নিয়ে এখন রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করা হচ্ছে। নাসিরনগরে এনসিপির নতুন সার্চ কমিটিতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী ঘরানার নেতাদের জায়গা দেওয়া হয়েছে—আমরা এই কমিটি বাতিলের দাবি জানাই।”
জুলাই আন্দোলনে উত্তর বাড্ডায় গুলিবিদ্ধ লুৎফুর রহমান বলেন, “আমার হাতের অবস্থা এমন যে এখন কাজ করতে পারি না। ‘জুলাই সনদ’ ও আহতদের স্বীকৃতি এখন সময়ের দাবি। যারা আওয়ামী পুনর্বাসন করছে, তাদের প্রতিহত করা হবে। আমাদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না।”
আহত যুবক ইকরাম হোসেনের মা নাসিমা খাতুন বলেন, “ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর স্বপ্ন ছিল। কিন্তু সে গুলিবিদ্ধ হয়ে একটি চোখ হারিয়েছে। কোনো সহায়তা পাইনি। আমি ছেলের চিকিৎসা নিজের খরচে করেছি। এখন চাই তার বিচার এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।”
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এনসিপির সার্চ কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের এনসিপি প্রার্থী কাজী মমিনুল হাসান বলেন, “বিএনপি, জামায়াত এমনকি এনসিপির একটি অংশও মাঝে মাঝে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছে। এটি শহীদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। সরকার জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে চেয়ে এক মাস সময় নিয়েছিল, এখনো গেজেট প্রকাশ করেনি। এটা প্রমাণ করে, সরকার গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় নেই। জনগণই শেষ কথা বলবে।”
মানববন্ধনে আহত জুলাই যোদ্ধাদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার স্থানীয় নারী-পুরুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। বক্তারা বলেন, যতদিন পর্যন্ত ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন ও শহীদদের স্বীকৃতি না মিলবে, ততদিন এই আন্দোলন চলবে।
ইএইচ