বড়পুকুরিয়ার কয়লাখনিতে চীনা শ্রমিকের মৃত্যু

দিনাজপুর প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০১:১২ পিএম

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে পৃথক দুটি দুর্ঘটনায় এক চীনা শ্রমিক নিহত হয়েছেন এবং একটি বিস্ফোরণে ১০ বছর বয়সী এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে।
দুই ঘটনাই ঘটেছে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে।

একদিকে খনির ভেতরে হাইড্রোলিক যন্ত্রের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন চীনা শ্রমিক মিস্টার ওয়াং (৩০)। অন্যদিকে, খনির পরিত্যক্ত একটি ডেটোনেটর বিস্ফোরণে তিনটি আঙুল হারিয়েছে ইলিয়াস হোসেন নামে এক শিশু।

বিকেল ৫টার দিকে খনির ভূগর্ভস্থ ১৩০৫ নম্বর ফেজে যন্ত্রাংশ অপসারণের কাজ চলছিল।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম সরকার জানান, হাইড্রোলিক সাপোর্টের অংশ স্টিল রোপ বের করার সময় ওয়াং রোপের সঙ্গে আটকে পড়েন। আরেক চীনা শ্রমিক রোপ টান দিলে ওয়াং সাপোর্টের সঙ্গে চেপে যান ও গুরুতর আহত হন।

তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।

মৃতদেহ এখন চীনা কনসোর্টিয়ামের তত্ত্বাবধানে, তাদের নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী দাফন বা সৎকার প্রক্রিয়া চলছে।

একই দিনে দুপুরে কয়লাখনি সংলগ্ন চৌহাটি গ্রামের ১০ বছরের শিশু ইলিয়াস হোসেন মাইনিংয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি অবিস্ফোরিত ডেটোনেটর কুড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ইলিয়াস খেলার ছলে ডেটোনেটরের তার দুটি মোবাইল ব্যাটারির সঙ্গে সংযুক্ত করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটে, আর তাতেই ডান হাতের তিনটি আঙুল উড়ে যায়।

তাকে প্রথমে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ইলিয়াস চৌহাটি গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম সরকার জানান, শিশুটির ঘটনার পেছনের কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি শিশুটির চিকিৎসায় খনি কর্তৃপক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

স্থানীয়রা বলছেন, খনি এলাকা থেকে মাইনিংয়ের ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান যথাযথভাবে নিষ্কাশন বা নিষিদ্ধ করার সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা না থাকায় এমন দুর্ঘটনা ঘটছে বারবার। তারা দুর্ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

বিআরইউ