যশোর-খুলনা মহাসড়ক যেন মরণফাঁদ

রাজয় রাব্বি, অভয়নগর (যশোর) প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০৪:৩৫ পিএম

সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে যশোর-খুলনা মহাসড়ক এখন যেন এক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বৃষ্টি হলে কাদা, আর রোদে উড়ে ধুলার ঝড়। প্রতিদিনই চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন হাজারো মানুষ, শিক্ষার্থী এবং পরিবহন চালকরা।

সড়কটি পাকা হলেও বর্তমান অবস্থা দেখে তা বোঝার উপায় নেই। সড়কের গর্তে জমে থাকা পানি, কর্দমাক্ত অবস্থা এবং যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকা যানবাহন এখন নিত্যদিনের দৃশ্য। বিশেষ করে অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ থেকে চেঙ্গুটিয়া পর্যন্ত সড়কের অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে, ভারী যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটে চলাচল করাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে সড়কটি চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বৃষ্টির পর সড়ক কাদায় একাকার হয়ে যায়। নিয়মিত ট্রলি, ডাম্পার ও ট্রাকের মাধ্যমে মাটি ও বালি বহন করা হয়। এসব অবৈধ যানবাহন থেকে পড়ে থাকা মাটি ও বালি রোদের সময় ধুলায় এবং বৃষ্টিতে কাদায় পরিণত হয়ে সড়কটিকে করে তুলেছে দুর্ঘটনার ফাঁদ।

বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও হালকা যানবাহনের চালকদের জন্য এই সড়ক পাড়ি দেওয়া বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পথচারীদেরও পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।

এক ট্রাক চালক জাহিদুল ইসলাম জানান, “প্রতিদিনই অন্তত ২-৩টি ট্রাক গর্তে আটকে পড়ে। গতকাল রাত ৩টায় এসেছি, এখন পর্যন্ত ১৩ ঘণ্টা পরও এক কিলোমিটার রাস্তা পার হতে পারিনি।”

গড়াই পরিবহনের চালক রমজান আলী বলেন, “বর্ষায় কাদা আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলা—এই দুই যন্ত্রণায় বছরজুড়েই ভুগতে হয়।”

মোটরসাইকেলচালক মেহেদী জানান, “বৃষ্টিতে কাদা, রোদে ধুলা—দুই সময়েই কিছু দেখা যায় না। কাদায় স্লিপ খেয়ে পড়ে যাই, ধুলায় নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।”

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মাটি ও বালি ব্যবসায়ী এবং ইটভাটা মালিকদের লাইসেন্সবিহীন ট্রলি ও ট্রাক এই মহাসড়ক ব্যবহার করছে। এসব যানবাহনের কারণে সড়কের এই করুণ অবস্থা তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, “হাইওয়ে পুলিশ ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে। অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান ও মামলা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনা কমাতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সড়কের সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।”

যশোর সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজ বলেন, “কন্ট্রাক্টরকে ডেকে জরুরি ভিত্তিতে মেরামতকাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে কিছুটা বিলম্ব হলেও দ্রুত কাজ শুরু হবে এবং ভোগান্তি কমে আসবে।”

ইএইচ