টাঙ্গাইলের মধুপুরে পরিবেশবিধ্বংসী হিসেবে চিহ্নিত বিদেশি প্রজাতির ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের চারা নিধনে অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) মধুপুর হাট ও কুড়াগাছা ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের একাধিক নার্সারিতে অভিযান চালিয়ে এসব চারা জব্দ ও ধ্বংস করা হয়।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, পরিবেশবিরোধী এসব গাছের উৎপাদন, বিপণন ও পরিবহণ সম্প্রতি সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় মধুপুরে কৃষি মেলার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এই অভিযান শুরু হয়। গত কয়েক দিনে প্রায় তিন লাখ ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের চারা ধ্বংস করা হয়েছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মির্জা জুবায়ের হোসেন ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রকিব আল রানা।
উপস্থিত ছিলেন– নার্সারি উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি আলমগীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ, সহ–সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা, নার্সারি ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছ দ্রুতবর্ধনশীল হলেও এগুলোর পাতা, ফুল ও শেকড় মাটি ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। দীর্ঘমেয়াদে তা জীববৈচিত্র্য ও কৃষি ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এজন্য সরকার দেশজ উদ্ভিদ সংরক্ষণের লক্ষ্যে এই দুটি গাছের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
তবে হঠাৎ অভিযানে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় নার্সারি মালিক ও কৃষকেরা। অনেকেই ধার-দেনা করে এসব চারা তুলেছেন বলে জানান। তারা সরকারি প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রকিব আল রানা বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক অভিযান চলছে। মঙ্গলবার মধুপুরের হাট বাজার ও নার্সারিতে অভিযান চালিয়ে উল্লিখিত গাছের চারা ধ্বংস কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।’ এ অভিযানসহ গত কয়েক দিনের অভিযানে প্রায় ৩ লক্ষ এসব নিষিদ্ধ গাছের চারা ধ্বংস করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, বন অধ্যুষিত ও সামাজিক বনায়নের মধুপুরে সরকার নির্দেশিত এ অভিযান খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি চলমান প্রক্রিয়া। কৃষক যাতে পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সরকার সে দিকটা বিবেচনায় রেখেছে। পরিবেশ ও বন রক্ষায় সরকারের এ উদ্যোগ
বাস্তবায়নে সচেতন সকলকে এগিয়ে এসে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার আহবানও জানান তিনি।
অভিযান পরিচালনার আগে গণবিজ্ঞপ্তি না দেওয়ায় জনসচেতনতায় ঘাটতি থাকছে কি না— এমন প্রশ্নের উত্তরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মির্জা জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পর আলাদা নোটিশ লাগে না। এটা সর্বজনবিদিত।’
বিআরইউ