ময়মনসিংহে জামিয়া ফয়জুর রহমান (রহ.) বড় মসজিদ মাদ্রাসায় ফের উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিশু বলাৎকারের অভিযোগে বহিষ্কৃত এক শিক্ষককে পুনরায় নিয়োগ ও দুজন সিনিয়র শিক্ষককে অব্যাহতির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আজ প্রায় তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা নগরীর পাটগুদাম থেকে কাচারি পর্যন্ত প্রধান সড়ক অবরোধ করে রাখেন। তাদের অভিযোগ, জেলা প্রশাসক ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মুফিদুল আলম একতরফাভাবে এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা জানান, শিশু বলাৎকারের অভিযোগে বহিষ্কৃত মাওলানা আজিজুল হককে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে মাদ্রাসায় পুনর্বহাল করা হয়েছে। পাশাপাশি সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি মোফাজ্জল হোসাইন, নায়েবে মুহতামিম মুফতি সারওয়ার হোসাইন ও খতিব মাওলানা আব্দুল হককে অব্যাহতির প্রক্রিয়া চলছে, যা মাদ্রাসায় তীব্র অসন্তোষ তৈরি করেছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী তাওহীদুল ইসলাম ও নাজমুস সাকিব বলেন, একটি মহল বহিষ্কৃত শিক্ষক আজিজুল হকের পক্ষ নিয়ে আমাদের বড় হুজুরের (অধ্যক্ষ আব্দুল হক) বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলে মূল ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা চলছে।
শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, জেলা প্রশাসক শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন এবং মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ বিষয়কে কেন্দ্র করে পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তারা এসব সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান, অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেন।
এদিকে, ঘটনার পেছনে মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ কোন্দলও বড় কারণ বলে জানা গেছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমান অধ্যক্ষ আব্দুল হকের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় পরিবারতন্ত্র কায়েমের অভিযোগ রয়েছে, যা নিয়ে পরিচালনা কমিটির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম ও অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, জামিয়া ফয়জুর রহমান মাদ্রাসায় এর আগেও পরিচালনা কমিটিকে ঘিরে বিরোধ ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক উত্তেজনা সেই পুরোনো দ্বন্দ্বকে আরও ঘনীভূত করেছে।
বিআরইউ